স্টাফ করেসপনডেন্ট, নওগাঁ:
নওগাঁর পত্নীতলায় অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনোষ্টিক ও ভুল চিকিৎসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দুই সাংবাদিক। তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে সাংবাদিকতা না করার প্রতিশ্রুতি লিখে নেয়া হয়।
নির্যাতনের শিকার সাংবাদিকরা হলেন, দৈনিক জয়পুরহাট বার্তার প্রতিনিধি মাহমুদুন নবী ও দৈনিক মানবকন্ঠের প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম। মাহমুদুন নবী বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর রবিউল ইসলাম নিজ বাড়িতেই আছেন।
নির্যাতনের শিকার মাহমুদুন নবী জানান, শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিনি নজিপুর বাজারে সিটি ক্লিনিকের সামনে একটি দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় সিটি ক্লিনিকের চিকিৎসক ও মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার দেওয়ান সবুর হোসেন তাকে জোর করে ক্লিনিকের ভেতরে ধরে নিয়ে যায় এবং মারধর শুরু করে। ঘরে আটকে রেখে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে কয়েক দফায় তাকে মারধর করা হয়।
তিনি আরও জানান, তাকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় তারা। এ সময় তিনি আর সাংবাদিকতা করবেন না এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে মাহমুদুন নবীকে একটি রাজস্ব ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করানো হয়। এছাড়া ফেসবুকে লাইভে সাংবাদিকতা না করার ঘোষণা এবং গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা এসে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
অন্যদিকে, একইদিন রাত ১০টার দিকে মানবকন্ঠের প্রতিনিধি রবিউল ইসলামকে বাড়ির সামনে থেকে মোটরসাইকেলে করে তুলে সিটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখনে একটি ঘরে আটকে নির্যাতন করা হয়। তাকেও একইভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, এ ঘটনায় চিকিৎসক ও ক্লিনিক ডায়াগনোষ্টিকের মালিকপক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছেন। সিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ জানান, চিকিৎসকদের সাথে সাংবাদিকদের দ্বন্দ্ব হয়েছে। ঘটনার সাথে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কেউ জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি। আর চিকিৎসক দেওয়ান সবুর হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে দোষ চাপিয়ে দেন মালিকপক্ষের ওপর।
এ বিষয়ে পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিক মাহমুদুন নবী ও রবিউল ইসলামকে উদ্ধার করে আনা হয়েছিলো। তবে তারা এখনও কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
/এএস
Leave a reply