গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড়ের ৮০ বছরের হতদরিদ্র বৃদ্ধা ফইরন নেছার বসবাসের জন্য নতুন ঘর, টিউবয়েল ও ল্যাট্রিন দেয়া হয়েছে। এসময় রেশন কার্ডের প্রথম মাসের চাল, ডাল ও সয়াবিন তেল এবং নগদ টাকা দেয়া হয় ফইরন নেছাকে।
গাইবান্ধা পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া নিজ উদ্যোগে একটি সেমি পাকা ঘর, একটি ল্যাট্রিন, একটি টিউবয়েল ও একটি রেশন কার্ডের ব্যবস্থা করেন। শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের জোদ্দকড়িসিং (সুংসুংগির মোড়) এলাকার ফইরন নেছার বাড়িতে গিয়ে নিজ হাতে এসব হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার। এসময় তাকে নগদ টাকাও দেন পুলিশ সুপার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেড কোয়াটার) নিয়তী রায়, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আতাউর রহমান ও সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মো শাহরিয়ার।
এরআগে, গত ১৪ অক্টোবর ফেসবুকে ‘আর কত বয়স হলে সরকারি ভাতা পাবে বল্লমঝাড়ের ফইরন নেছা’ শীর্ষক একটি স্ট্যাটাস দেন দৈনিক আমাদের সময়ের গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি খায়রুল ইসলাম। স্ট্যাটাসটি দেখে পুলিশ সুপার ফইরন নেছার বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেন এবং তাকে সহযোগিতার কথা জানান।
ফইরন নেছার স্বামী মকবুল হোসেনের মৃত্যুর পর থেক খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছিলেন। এমনকি সামান্য বাড়ি ভিটে থাকলেও মাথা গোজার ঠাই হিসেবে ঘর ছিলনা। দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করতেন ফইরন নেছা।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, একজন বৃদ্ধা মা খেতে পারেন না, নিজের ঘর নেই। এমন একজন মায়ের অসহায়ত্বের কথা জেনে খুবই ব্যথিত হয়েছি। সুন্দর ভাবে বসবাসের জন্য ঘর ও বাথরুম তৈরি করে দিয়েছি। শেষ জীবন পর্যন্ত তিনি ঘরেই নিরাপদে থাকতে পারবেন’
তিনি আরও বলেন, ‘দু’বেলা ঠিকভাবে যাতে ফইরন নেছাকে খেতে পারেন সেজন্য তার নামে একটি রেশন কার্ড দেয়া হয়েছে। তাকে প্রথম মাসের ১০ কেজি চাল, ৩ কেজি ডাল ও ১ কেজি সয়াবিন তৈল দেয়া হয়। প্রতিমাসের শুরুতে একজন পুলিশ সদস্য তার বাড়ি গিয়ে রেশন কার্ডের চাল, ডাল ও তেল পৌছে দিবেন’।
এদিকে, পুলিশ সুপারের ঘর, ল্যাট্রিন আর রেশন কার্ড পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে উঠেন ফইরন নেছা। বিশ্বাসেই করতে পারছিলেন না তিনি।
ফইরন নেছা বলেন, খায়া না খেয়ে দিন কাটে, থাকার কোন জায়গা নাই। পুলিশ বাবু হামক চেনে না, তাও খুঁজে বার করল। ঘর, খাবারে ব্যবস্থা করে দেয়ায় শান্তিতে ঘরত ঘুমার পামো। আল্লাহ্ তোমার ভালো করুক বাবা’।
Leave a reply