পাহাড় নাকি সমুদ্র? ভ্রমণ পিপাসুদের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে মিষ্টি দ্বন্দ্ব চলে সবসময়। চোখের শান্তির জন্য কেউ বলেন নীল সমুদ্র-ই দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ের উপশম। আবার কেউ বলেন, ‘আপনের চেয়ে পর ভালো, পরের চেয়ে জঙ্গল ভালো।’ মানে জঙ্গলের খোঁজে যেতে হবে পাহাড়ে। পাখির গান, দুর্গম পথ, বৃষ্টির শব্দ আর জখমের মলম; সবই যেন পাওয়া যাবে পাহাড়ে।
অফিসের চাপ কিংবা সবকিছু থেকে একটু ব্রেক নিতে অনেকই যান পাহাড়ে। করেন ক্যাম্পিং। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে ভ্রমণ গ্রুপ। সব বন্ধুরা এক সাথে পিঠে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়েন পাহাড় দেখতে। ছবি: রেনবো মাউন্টেন বা ভিনিকুঙ্কা পেরুর কুস্কোর কাছে একটি পর্বত।
তবে মানসিক চাপ কাটাতে অনেকেই একা কিংবা পরিবার নিয়ে নিয়মিত যান সমুদ্রে। কিছুদিন আগে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ‘ব্লু মাইন্ড থিওরি’। সেখানে এই দ্বন্দ্বের অবসানের একটি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।
এই ‘ব্লু মাইন্ড থিওরি’টি কী? ২০১৫ সালে, বিজ্ঞানী ওয়ালেস জে নিকোলস এই তত্ত্বটি দেন। তিনি পরীক্ষা করে দেখান, কোন পরিস্থিতি মনের জন্য সবচেয়ে ভালো। কোন পরিস্থিতিতে মানুষ মানসিক চাপ সবচেয়ে কম বোধ করেন? সেটি তিনি দেখান পরীক্ষার মাধ্যমে। আর এটিই হল ‘ব্লু মাইন্ড থিওরি’।
থিওরিতে বলা হয়েছে, সমুদ্রের কাছে গেলেই মানুষের মন সবচেয়ে ভালো হয়। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। শুধু তাই নয়, মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠে বেশ একটা ধ্যানস্থ ভাব জাগে এতে। কিন্তু কেন জলের কাছে গেলে এরকম হয়? ছবি: ক্রোয়েশিয়া।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, পানি দেখা ও পানির শব্দ শোনা: এই দুটোই মস্তিষ্কে দারুণ প্রভাব ফেলে। এতে মস্তিষ্ক শান্ত হয়। মনের আরাম হয়। আর এই বিষয়টিকেই ‘ব্লু মাইন্ড থিওরি’ বলা হয়। ফলে সমুদ্রের কাছে গেলেই মন বেশি ভালো হয়; এমন দাবি করেছেন অনেকেই। ছবি: আমালফি, ইতালি।
তবে, একটি কথা এর পাশাপাশি বলা হয়েছে। পাহাড়ে গেলেও মন ভালো হতে পারে। সেটি এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম ভাবে কাজ করে। কিন্তু সব মিলিয়ে পানির রং এবং শব্দের একটা ভালো প্রভাব আছে মানুষের মনে। ছবি: স্পেন।
শুধুমাত্র সমুদ্র নয়, নদী, এমনকী সুইমিং পুলের কাছে গেলেও এই ধরনের মনভালো করা অনুভূতি হতে পারে বলে মনে করেন অনেক মনোবিদই। আর এখান থেকেই জন্ম নিয়েছে এই ‘ব্লু মাইন্ড থিওরি’।
/এআই
Leave a reply