চেন্নাই টেস্ট জিততে হলে গড়তে হবে রান তাড়ার বিশ্ব রেকর্ড। তবে ওপেনিংয়ে দারুণ শুরু করেও চা বিরতির পর দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এই টেস্ট জিততে হলে বাকি দুই দিনের মধ্যে বাংলাদেশকে করতে হবে আরও ৩৫৭ রান, হাতে বাকি ৬ উইকেট। ফিফটি হাঁকিয়ে ৫১ রানে অপরাজিত অধিনায়ক শান্ত। সাকিব আল হাসান ৫ রান নিয়ে কাল ফের ব্যাটিংয়ে নামবেন। জয়ের সুবাস নিয়েই কাল চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করবে ভারত।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে ৩ উইকেটে ৮১ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে ভারত। শুরুতে কিছুটা ধীরগতিতে রান তুললেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন আগের দিনে অপরাজিত ব্যাটার শুভমান গিল ও রিশাভ পান্ত। মারকুটে ব্যাটিংয়ে সঙ্গে কিছু ভুল শটও খেলেছিলেন তারা। তাদের সেই ভুল ক্যাচ মিসের মাধ্যমে ক্ষমা করেছে বাংলাদেশ।
তাসকিনে আহমেদের করা ৩৫তম ওভারে গিলের ক্যাচ ফেলে দেন তাইজুল ইসলাম। এরপর ৪৯তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে মিড-উইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারেন পান্ত। আকাশে ভাসতে থাকা বল তালুতে জমার করার জন্য পর্যাপ্ত সময় পেলেও ব্যর্থ হন শান্ত। জীবন পেয়ে পান্ত ও গিল, দুইজনই সেঞ্চুরি হাঁকান।
চতুর্থ উইকেটে ১৬৭ রানের বিশাল জুটি করেন পান্ত-গিল। অবশেষে ভারতের এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তৃতীয় দিনে এটিই বাংলাদেশের বোলিং ইউনিটের একমাত্র প্রাপ্তি। সেঞ্চুরি হাঁকানো রিশাভ পান্তকে নিজের হাতের ক্যাচ বানান ডানহাতি টাইগার স্পিনার। ১২৮ বলে ১০৯ রান করেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১৩ চারের সঙ্গে ৩টি ছক্কা হাঁকান পান্ত।
পান্তের বিদায়ের পর সেঞ্চুরি তুলে নেন গিলও। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটারের এটি টানা দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে শতক। এ বছর সবমিলিয়ে তৃতীয় সেঞ্চুরি গিলের। ৪ উইকেটে ২৮৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। বাংলাদেশের সামনে দাঁড়ায় ৫১৫ রানের বড় লক্ষ্য। ইনিংস ঘোষণার সময় গিল ১১৯ রানে ও লোকেশ রাহুল ২২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
ভারতের দেয়া ৫১৫ রানের পাহাড়সম টার্গেট বাংলাদেশ টপকাতে পারলেই লেখা হয়ে যাবে ইতিহাস। দুই ওপেনারের ব্যাটে অবশ্য উড়ন্ত সূচনা পায় সফরকারী দল। চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ১৩ ওভার খেলে জাকির-সাদমান মিলে করেন ৫৬ রান। টেস্টে ভারতের বিরুদ্ধে তাদের মাঠে বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে প্রথম ৫০ রানের পার্টনারশিপ।
চা বিরতির পর চতুর্থ ওভারেই সাফল্য পায় ভারত, দ্রুতই উইকেট হারান জাকির হাসান। ৩৩ রানে থাকা জাকিরকে গালি অঞ্চলে ক্যাচ বানান জাসপ্রীত বুমরাহ। আর তাতেই ভাঙে ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি। আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামও ইনিংস টেনে নিয়ে যেতে পারেননি বেশিদূর। রবিচন্দ্রন স্পিনে বিপাকে ফেলেন সাদমানকে, শর্ট মিডউইকেটে অবিশ্বাস্যভাবে ক্যাচ লুফে নেন শুভমান গিল।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ তখন স্বস্তি খুঁজে পায় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের ব্যাটে। তবে অশ্বিনের স্পিনে স্টাম্প হারিয়ে বাংলাদেশকে হতাশায় পোড়ান মুমিনুল। ইনিংস বড় করতে পারেননি ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিমও। আউট হয়েছেন একই বোলার অশ্বিনের কাছে। সমান ১৩ করে রান পেয়েছেন এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
এরপর শান্তকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। অশ্বিনকে ছক্কা হাঁকিয়ে ৫৫ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন শান্ত। তবে মেঘলা আকাশ ও আলোকস্বল্পতার কারণে নির্ধারিত সময়ের ৯.৪ ওভার আগেই দিনের খেলা সমাপ্ত ঘোষণা করতে বাধ্য হন অনফিল্ড আম্পায়াররা। চেন্নাই টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে চালকের আসনে ভারত। ভারত-বাংলাদেশ চেন্নাই টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষে এ কথা বলে দেয়াই যায়। প্রথম টেস্টে জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছেন রোহিত-কোহলিরা।
/আরআইএম
Leave a reply