বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডে তারেক: আচরণবিধি লঙ্ঘন?

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, দণ্ডিত একজন ব্যক্তির এভাবে সাক্ষাৎকার গ্রহণে উপস্থিত থাকা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দলের ভাইস চেয়ারম্যানের মনোনয়ন বোর্ড হাজির থাকা, না থাকা একান্ত দলীয় বিষয়। কমিশনের কিছু করার নেই এতে।

আজ রোববার যমুনা টিভির টকশো ‘রাজনীতি’র আলোচকরাও এ নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।

টকশো তে বিএনপি নেতা এডভোকেট আহমদ আযম খান বলেন, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সাজানো মামলায় ফরমায়েশি রায় দেয়া হয়েছে তড়িগড়ি করে। নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে।

প্রার্থীদেরকে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ডের প্রশ্ন ছিল- টিকে থাকতে পারবেন তো? জয় পরাজয়ের চেয়ে কি এখন বিএনপির কাছে টিকে থাকাই মূখ্য হয়ে ওঠেছে। এমন প্রশ্নে জবাবে আহমদ আযন খান বলেন, দেশে যখন স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করে না, অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা দেয়, তখন নেতা এবং কর্মীদের কাছে এই প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দেয়। এত প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও এবং ৭ দফার কোনো একটি দাবি না মানার পরও বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

‘এরপরও সরকার তার নিপীড়ন ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। সেদিন মনোনয়ন নিতে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশ হামলা চালালো। গ্রামে গ্রামে বিএনপির নেতাকর্মীদের তালিকা করে গ্রেফতার করা হচ্ছে, যাতে তারা নির্বাচনে এজেন্ট হতে না পারে। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক পরিচয় জানতে নির্বাচন কমিশনে ফোন করছে পুলিশ। এসবের মধ্যে নেতা যদি টিকে থাকার প্রশ্ন করেন- তাহলে তা খুবই স্বাভাবিক।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নুহ উল আলম লেনিন বলেন, তারেক রহমান দুটি মামলায় দণ্ডিত। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় দণ্ড হয়েছে। তিনি আদালতের সামনে হাজির না হয়ে পলাতক আছেন। কলকাটি নাড়ছেন। তিনি প্রকৃত দেশপ্রেমিক হলে সৎ হলে তারেক দেশে ফিরে আসতেন।

সচিবালয়ে মন্ত্রীর রাজনৈতিক আলাপ নির্বাচনী আচরণ লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, ওবায়দুল কাদের একই সাথে মন্ত্রী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক। দুটি আলাদা টুপি পরে আছেন তিনি। ফলে একটি টুপি পরে থাকাবস্থায় অন্য বিষয়ে কথা বললে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রশ্ন উঠবে।

তারেকের এই ভূমিকা নিয়ে আওয়ামী লীগ বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। বিএনপি তো তাকে নেতা হিসেবে রেখেছে দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে। তারেককে মনোনয়ন বোর্ডে রাখার বিষয়টি আচরণবিধির লঙ্ঘন কিনা সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত দিতে পারবে। তবে আমি মনে করিনা এ নিয়ে আওয়ামী লীগের উদ্বিগ্ন হওয়া কিছু আছে।

নুহ আলম লেলিন বলেন, তারেক রহমানের নেতৃত্ব হাইকোর্ট গ্রহণ করেনি। কাজেই নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ডে তার থাকার কোনো সুযাগ নেই। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন।