চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
প্রাথমিকে ঝড়া পড়া রোধ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে চুয়াডাঙ্গায় সরকারি অর্থায়ানে দেশের প্রথম আলোকিত স্মার্ট স্কুল চালু করা হয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি নির্ভর ও আগামীর আলোকিত মানুষ হিসাবে গড়ে তোলাই এটির প্রধান লক্ষ্য।
দেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল। তাই স্কুলটিতে ভিন্নতাও আছে বেশ। গোটা স্কুলটি নানা রঙে সাজিয়ে শোভাবর্ধণ করা হয়েছে শিশুদের দৃষ্টিনন্দন করতে। ডিজিটাল হাজিরাসহ শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পাঠদান করতে পারছেন। বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিকল্পনায় গড়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম আলোকিত স্মার্ট স্কুল। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলোকদিয়া ইউনিয়নের পীরপুর গ্রামে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্কুলটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্কুলটি দৃষ্টিনন্দন করতে প্রতিটি দেয়ালে নানা রঙের রং তুলি, ছবি ও কার্টুন আকা হয়েছে। যাতে করে কোমলমতি শির্ক্ষাথীরা স্কুলমুখী হয়।
আফসার উদ্দীন নামে এক অভিভাবক জানান, কিছুদিন আগেও গ্রামের প্রাইমারি স্কুলটি ছিলো ভাঙ্গাচোরা। সামান্য বৃষ্টিতেই পানি পড়তো শ্রেণি কক্ষে। শিক্ষকরাও শ্রেণি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে তেমন মনোযোগী ছিলেন না। আর এ কারণে ছেলে মেয়েরা স্কুলে না যেতে নানা ফন্দি আটতো। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল হওয়াতে স্কুলটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে। নানান রঙে সাজিয়ে তোলা হয়েছে গোটা স্কুল প্রাঙ্গন। রঙিন ও দৃস্টিনন্দন হওয়াতে নিজ উদ্যোগেই তারা স্কুলে যাচ্ছে।
স্মার্ট স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আব্দুর জব্বার জানান, বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল তাদের গ্রামে হওয়াতে দারুণভাবে খুঁশি গ্রামের সাধারণ মানুষ। এতে করে গ্রামে ছেলে মেয়েদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। অভিভাবকরাও অনেক সচেতন হয়েছে।
সুমাইয়া ও রবীন নামে দুই কোমলমতি শিক্ষার্থী জানায়, বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট স্কুলের শিক্ষার্থী আমরা। এটা আমাদের জন্য খুব আনন্দের। একই সাথে এ স্কুলে লেখাপড়া করতে পেরে আমরা খুব খুঁশি।
প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, দেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল হওয়াতে আগের চেয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক বেড়েছে। তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি নির্ভর ও আলোকিত মানুষ গড়ে তোলাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।
দেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল নির্মাণের পরিকল্পনাকারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াশিমুল বারী জানান, ইতিমধ্যে সদর উপজেলার চারটি রঙিন স্কুল আমার পরিকল্পনাতে তৈরি হয়েছে। সেই পরিকল্পনা থেকেই বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট স্কুল তৈরির পরিকল্পনা মাথায় আসে।
তিনি আরও জানান, স্কুলটিতে শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল হাজিরার পাশাপাশি শিক্ষকদেরও এই হাজিরার আওতায় আনা হয়েছে। একই সাথে প্রতিটি ক্লাসে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও নিজস্ব ইন্টারনেট ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে সার্বক্ষানিক নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থার পাশাপাশি গোটা স্কুলটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় রাখা হয়েছে। তার মতে এমন উদ্যোগ শিশুদের স্কুলে যেতে দারুণভাবে উৎসাহিত করবে। একই সাথে প্রতিটি শিশু প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গড়ে উঠবে। আর এতে করেই দেশ ডিজিটাল বিনির্মাণে এগিয়ে যাবে।
এলজিএসপি-৩ প্রকল্পের আওতায় স্কুলটি নির্মাণে ব্যায় ধরা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। গত ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট স্কুলটি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল দাস।
Leave a reply