বিএনপির একক প্রার্থী হচ্ছেন যারা

|

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকটি আসনে বিএনপি একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষে খসড়া তালিকা তৈরিতে টানা তিন দিন বৈঠক করে পার্লামেন্টারি বোর্ড।শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত তারা এ বৈঠক করেন।

এ তালিকায় প্রতিটি আসনে দুই বা তিনজন করে সম্ভাব্য প্রার্থী রাখা হয়েছে। তবে প্রায় অর্ধশত আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।

কোনো কারণে তাদের প্রার্থিতা বাতিল হলে ওই আসনটি যাতে শূন্য না থাকে, সে জন্য বিকল্প হিসেবে একজন করে ডামি প্রার্থী রাখা হয়েছে।

যেসব আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে আছেন- ঠাকুরগাঁও-১ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, কুমিল্লা-২ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নোয়াখালী-৫ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ঢাকা-৩ গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ঢাকা-৮ মির্জা আব্বাস, নাটোর-২ রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সিরাজগঞ্জ-২ ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভোলা-৩ মেজর (অব.) এম হাফিজউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা-২ আমানউল্লাহ আমান, নোয়াখালী-৩ বরকতউল্লাহ বুলু, নোয়াখালী-৪ মো. শাহজাহান, লক্ষ্মীপুর-৩ শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, কক্সবাজার-১ সালাহউদ্দিন আহমেদ, নরসিংদী-২ ড. আবদুল মঈন খান, নরসিংদী-১ খায়রুল কবির খোকন, চট্টগ্রাম-১০ আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।

এ ছাড়া অন্যান্য আসনে যারা চূড়ান্ত হয়েছেন আজকালের মধ্যে এ খসড়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হতে পারে। ওই তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন তারেক রহমান।

খসড়া তালিকায় যাদের নাম থাকবে, তাদের দলীয় মনোনয়ন ফরম দেয়া হবে। আজকালের মধ্যে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এ ফরম ছাড়ার সম্ভাবনা আছে।

তবে প্রতিটি আসনে বিকল্প রেখেই এ তালিকা তৈরি হচ্ছে। চার দিনের সাক্ষাৎ শেষে পার্লামেন্টারি বোর্ড টানা তিন দিন বৈঠক করে এ খসড়া তালিকা তৈরি করে।

সূত্র জানায়, ২০-দলীয় জোটের শরিক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জন্য যেসব আসনে ছাড় দেয়া হবে, সে তালিকাও তৈরি করেছে বিএনপি। ২০-দলীয় জোটের শরিক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬০ আসনে ছাড় দেয়া হতে পারে।

জোট ও ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনায় বসবে বিএনপি। আজকালের মধ্যেই এ বৈঠক হবে। জোট ও ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে কিছু আসনে এখনও সমঝোতা হয়নি। আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এগুলো চূড়ান্ত করা হবে।

এর পর দল, জোট ও ফ্রন্টের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। তবে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ ও মহাজোটের প্রার্থী ঘোষণার পর তারা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তৃণমূলের মতামত এবং সব কিছু বিবেচনা করে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে, তাদেরই মনোনয়ন দেয়া হবে। অতীতে দলের প্রতি তার কতটা অবদান আছে সে বিষয়টিও প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। প্রার্থী চূড়ান্তের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ বিবেচনায় আনা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, শরিক ও ফ্রন্টের সঙ্গে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়নি। শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।

প্রার্থী চূড়ান্তে বড় ধরনের সমস্যা হবে না। যাদের জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারবে, তাদেরই মনোনয়ন দেয়া হবে। নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারিত হলেও মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৮ নভেম্বর।

বাছাই ২ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় আগামী ৯ ডিসেম্বর। প্রার্থীর নাম ঘোষণার ক্ষেত্রে বিএনপি প্রায় শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। ঝুঁকি এড়াতে আপাতত একাধিক বিকল্প প্রার্থীর মনোনয়নপত্র কমিশনে জমা দিলেও চূড়ান্তভাবে একজনকে রেখে বাকিদের প্রত্যাহার করতে বলা হবে।

প্রার্থীদের কাছ থেকে আগেই এ ব্যাপারে হলফনামা বা অঙ্গীকারে স্বাক্ষর করিয়ে রাখা হবে। যাতে বিএনপি চিঠি দিলেও একটি বাদে অন্য প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার হয়ে যায়।

সূত্র জানায়, প্রায় প্রতিটি আসনে চূড়ান্ত প্রার্থীর পাশাপাশি বিকল্প প্রার্থী রাখা হবে। কোনো কারণে প্রথম পছন্দের প্রার্থিতা বাতিল হলে দ্বিতীয়জনকে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হবে। দলের পাশাপাশি জোট বা ঐক্যফ্রন্টের আসনেও বিকল্প প্রার্থী রাখার চিন্তাভাবনা চলছে।

(সূত্র: যুগান্তর)


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply