বাউফল (পটুয়াখালী) করেসপনডেন্ট:
ইলিশের প্রজনন মৌসুম রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর চল্লিশ কিলোমিটার এলাকার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে চলছে ইলিশ ধরার মহোৎসব।
এসব ঘটনায় নির্বিকার প্রশাসন। যমুনা টেলিভিশনসহ একাধিক শীর্ষ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলেও কঠোর ভূমিকা নেই প্রশাসনের।
মঙ্গলবার (২২অক্টোবর) তেঁতুলিয়া নিমদী লঞ্চঘাট ও ধুলিয়া পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে ইলিশ শিকার করছেন প্রায় অর্ধশত অসাধু জেলে। দীর্ঘ দুইঘণ্টা এই দুই পয়েন্টে অপেক্ষা করলেও মৎস্য বিভাগ বা প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি। স্বাভাবিক সময়ের মতই বাধাবিপত্তি ছাড়া ইলিশ মাছ শিকার করছেন কিছু অসাধু জেলে।
গণমাধ্যমে প্রতিদিন সংবাদ প্রচারের পরেও নদীর অভয়াশ্রমে মা ইলিশের নিরাপত্তায় নিশ্চিতে মৎস্য বিভাগের এমন ব্যর্থতার কারণ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী যমুনা নিউজকে বলেন, নদীতে মাছ শিকারের পয়েন্ট দশটি, আমাদের টিম আছে দুইটি। পুলিশ নাই, আমি কি করবো!
এ সময় তিনি উল্টো যমুনা নিউজকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, পুলিশ ছাড়া আমার টিমকে জেলেদের কাছে পাঠিয়ে ঝামেলায় ফেলবো? জেলেরা টিমকে হিংস্রভাবে আক্রমণ করে। আর নৌ-পুলিশের মাত্র দুইটা টিম রয়েছে। তবে রাতে তাদেরকে পাওয়া যায়না। থানা পুলিশ ও নৌ-পুলিশ লোকবল সংকটে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিক কল করলেও তিনি সাড়া দেননি।
এদিকে নদী সুরক্ষিত রাখতে ইউএনওকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হবে জানিয়েছেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন। থানায় পুলিশ সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন যমুনা নিউজকে বলেন, পুলিশের একটি তাদেরকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করে। তবে সবসময় তাদেরকে সহযোগিতা দেয়া সম্ভব হয় না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিনই তেঁতুলিয়া নদীতে অবাধে মা ইলিশ শিকার করছেন জেলারা। ১৩ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞা জারির দিন থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত যমুনা টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদ বলছে, তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিদিন প্রায় শতাধিক অসাধু জেলে অবাধে মাছ শিকার করে। তাদের জালে ধরা পড়ছে মা ইলিশ। এভাবে ইলিশ ধরার ফলে ইলিশের প্রজনন ক্রমাগত কমে যাচ্ছে। যার ফলে সারাবছর বাজারে চাহিদানুযায়ী ইলিশ পাওয়া যায় না। যখন ইলিশের চাহিদা বেশি থাকে তখন দামও বেড়ে যায়।
/এমএইচ
Leave a reply