নোমান-সাজিদে ইংলিশ বধ, সাড়ে ৩ বছর পর হোমে টেস্ট সিরিজ জিতলো পাকিস্তান

|

ঘরের মাঠও যেন অচেনা হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের জন্য। হোম গ্রাউন্ডেও টেস্ট জিততে পারছিল না তারা। টানা ১১ টেস্ট জয়হীন আর শান মাসুদের নেতৃত্বে টানা ছয় টেস্ট হারের লজ্জার রেকর্ডও সঙ্গী করেছিল দলটি। এর মধ্যে ইংল্যান্ড সিরিজে প্রথম ইনিংসে ৫০০-এর বেশি রান করেও ইনিংস ব্যবধানে হারের লজ্জার রেকর্ড নিজেদের দখলে নেয় শানের দল। তবে এরপরই দারুণভাবে ঘুরি দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান।

মুলতান টেস্টে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ঘরের মাঠের ‘কুফা’ কাটিয়েছিল পাকিস্তান। এবার রাওয়ালপিন্ডিতে কুপোকাত ইংলিশরা। শান মাসুদের দলকে মাত্র ৩৬ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে বেন স্টোকসের দল। এই সহজ লক্ষ্য তিন ওভার ১ বলেই টপকে গেছে পাকিস্তান। ৯ উইকেটের জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলো স্বাগতিকরা।

এই টেস্ট জয়ের নায়ক মূলত তিনজন। ব্যাটিংয়ে সাউদ শাকিল, বোলিংয়ে সাজিদ খান ও নোমান আলী। দু’জনের স্পিনে কুপোকাত হয়েছে ইংলিশরা। সাজিদ প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করেন চারটি, অর্থাৎ দুই ইনিংস মিলিয়ে তার শিকার ১০ উইকেট। নোমান আলী সাজিদের চেয়ে একটি কম শিকার করেছেন। প্রথম ইনিংসে তিনটির পর দ্বিতীয় ইনিংসে শিকার করেন ৬ উইকেট।

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে টস জিতে আগে ব্যাট করে ইংলিশরা। সাজিদ খান ও নোমান আলীর ঘুর্ণিতে ২৬৭ রানে থামে ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৯ রান আসে জেমি স্মিথের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ওপেনার বেন ডাকেটের (৫২ রান) ব্যাট থেকে আসে।

তবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সাউদ শাকিলের ১৩৪ ও শেষদিকে নোমান আলীর ৪৫ এবং সাজিদ খানের ৪৮ রানে ভর করে লিড নেয় পাকিস্তান। স্বাগতিকরা প্রথম ইনিংসে থামে ৩৪৪ রানে। ইংলিশদের থেকে প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকে ৭৭ রানে। এই রান টপকাতে গিয়েই ৬ উইকেট হারায় সফরকারীরা।

দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে যার শুরুটা হয়েছিল সাজিদ খানের ঘুর্ণিতে। তার বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার ডাকেট। পরে শেষবেলায় জ্যাক ক্রোলি এবং ওলি পোপকে তুলে নেন নোমান। এতে ২৪ রানে ৩ উইকেটে দিন শেষ করে ইংলিশরা।

তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে জো রুট ও হ্যারি ব্রুকের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালায় বেন স্টোকসের দল। ৪৬ রানের এই জুটি ভাঙেন নোমান। তার বলে ব্রুকের বিদায়ে এক প্রকার লড়াই থেকে ছিটেই যায় ইংলিশরা। এরপর শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। একে একে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান অধিনায়ক স্টোকস, জেমি স্মিথ, জো রুট। এতে ৮৫ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ধুকতে থাকে ইংল্যান্ড। এরপর অ্যাটকিনসনের বিদায়ে একশর আগেই (৯৮) ৮ ‍উইকেটের পতন হয় সফরকারীদের। শেষ পর্যন্ত ১১২ রানে থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস। দলের পক্ষে জো রুট সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন।

৩৬ রানের সহজ লক্ষ্য পেয়েও খেলা শেষ করে মাঠ ছাড়তে পারেননি পাক ওপেনার সায়েম আইয়ুম। দলীয় ১৪ রানে ও ব্যক্তিগত ৮ রানে জ্যাক লিচের বলে লেগবিফোরের ফাঁদে কাটা পড়েন তিনি। তবে অধিনায়ক শান মাসুদ ব্যাটে নেমে টি-টোয়েন্টির মেজাজে মাত্র ৬ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

প্রথম ইনিংসে ১৩৪ করা সাউদ শাকিলের হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। আর সিরিজে ১৯ উইকেট ও ৭৬ রান করার সুবাদে সাজিদ খান জিতেছেন সিরিজসেরার পুরস্কার।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply