ছাত্র আন্দোলনে নিহত নবীনের পরিবারের খোঁজ রাখে না কেউ

|

বাউফল (পটুয়াখালী) করেসপনডেন্ট:

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অসহায় অবস্থায় দিন পার করছেন পটুয়াখালী বাউফল উপজেলার বাসিন্দা নবীন তালুকদারের পরিবার। গত ১৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে ঢাকার পল্টনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি। নবীন বাউফল উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাউফলের ইন্দ্রকুল গ্রামে নানা বাড়িতে নবীন তালুকদারের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তার পরিবারের সদস্যরা বসবাস করেন রাজধানী ঢাকায়। সরকার কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকে কেউই পরিবারটির তেমন কোন নেয়নি বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা।

সম্প্রতি নবীন তালুকদারের নানা বাড়ি উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের ইন্দ্রকুল গ্রামের মীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে নবীন তালুকদারকে দাফন করা হয়েছে। বাড়িতে সুনসান নীরবতা।

নবীন তালুকদার যুবদলের রাজনীতি করায় ঢাকায় নিয়মিত বিএনপির আন্দোলনে অংশ নিতেন। এ ছাড়া শ্যামপুর এলাকায় একটি ছোট দোকান ছিল নবীন তালুকদারের। সেই দোকানের আয় দিয়েই চলতো তার সংসার। তবে নবীন তালুকদারের মৃত্যুর পর সে দোকানটিও ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ফলে পরিবারটি এখন অসহায় হয়ে অবস্থায় দিন পার করছে।

নবীন তালুকদারের স্ত্রী রুমা আক্তার জানান, নবম শ্রেণিতে তার ছেলে এবং মেয়ে লেখাপড়া করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার স্বামীর মৃত্যু হলেও বর্তমানে তাদের আর কেউ খোঁজ খবর রাখছে না। কোনভাবে অভাব-অনটনের মধ্যদিয়ে সংসার চলছে তাদের। তবে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

মীর বাড়িতে গিয়ে আমাদের কথা হয়েছে নবীন তালুকদারের মামি রুশিয়া বেগমের (৮৫) সাথে। তিনি বলেন, এই বাড়িতেই বড় হয়েছে নবীন। দুটো ছেলে-মেয়ে রেখে মারা গেছেন তিনি। বাড়ির কবরস্থানেই তাকে দাফন করা হয়েছে। জীবনে অনেক কষ্ট করছে। সন্তানদের শিক্ষিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু কি সব শেষ হয়ে গেল।

নবীন তালুকদারের মামা খলিল মীর বলেন, মৃত্যুর পর সরকারের অনেক সংস্থা থেকে আমাদের সাথে যোগযোগ করা হলেও কোন ধরনের সহযোগিতা করা হয়নি।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, নিহতদের তালিকা তৈরি করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এসব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে সহায়তা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে নিহতদের কবর সংরক্ষণের জন্য বাধাঁই করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকার গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক শহীদদের নামে নামকরণ করার বিষয়েও তারা কাজ করছেন।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply