দিন পেরিয়ে মাস, মাস পেরিয়ে বছর! যুদ্ধ কবলিত গাজায় থেমে নেই এক টুকরো রুটির জন্য লড়াই। প্রতিনিয়ত ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে ফিলিস্তিনিদের। চিকিৎসার অভাবে অসুস্থ বা আহতদেরও ভোগ করতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। মানবিক সংকটের সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে বহু আগেই। নিরীহ ফিলিস্তিনিদের এমন ধুকে ধুকে বেঁচে থাকার দৃশ্য যেন প্রশ্নবিদ্ধ করছে গোটা মানব সভ্যতাকে।
উপচে পড়া ভিড়ের মধ্য থেকে যে আগে খাবার নিতে পারবে সেই জয়ী। শুধু মাত্র এক টুকরো রুটির জন্য এই যুদ্ধে নিজের সর্বস্ব দিয়ে লড়ছেন ৬৭ বছর ব্য়সী খালিল-আল-শানার। খাবারের আশায় শরনার্থী শিবিরে অপেক্ষারত তার পুরো পরিবার।
খালিল-আল-শানার বলেন, সকাল ৬টা থেকে এখানে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো কিছু পাই নি। পরিবারে সদস্য সংখ্যা ১৪ জন। ওরা খাবারের জন্য অপেক্ষা করছে। যুদ্ধে না মরলেও ক্ষুধায় অবশ্যই মরতে হবে আমাদের।
আটা বা অন্য কোনো খাবারের মজুদ নেই জাতিসংঘের গুদামগুলোয়। সাহায্য যেটুকু প্রবেশ করে ফুরিয়ে যায় দ্রুতই। ত্রাণের আশায় সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে অনেক ফিলিস্তিনিকে।
স্থানীয় সময় রোববার, ইউনাইটেড কিংডম-ভিত্তিক এনজিও অক্সফামের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় অনাহারকে একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে।
অক্সফামের খাদ্য নিরাপত্তা কর্মী মাহমুদ আলসাক্কা বলেন, উত্তর গাজায় ক্ষুধায় প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সামনের দিনগুলোতে বিপদ আরও বাড়তে পারে। বেশিরভাগ ফিলিস্তিনিরা ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভর করছে। সময়মতো ত্রাণ না পেয়ে অনেকই পুরো পরিবারসহ প্রাণ হারাচ্ছেন।
শুধু খাবার নয়, মানবিক সংকটের সব সীমাই ছাড়িয়েছে গাজা উপত্যকায়। হামাস সদস্যের উপস্থিতির অজুহাতে নিয়মিত হামলা-তল্লাশি চলছে হাসপাতালে। এছাড়াও, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার শিকার হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরাও।
আন্তর্জাতিক নিন্দা, চাপ উপেক্ষা করেও গাজায় ত্রাণ সহায়তা প্রবেশে বাধা দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। বন্ধ করে রাখা হয়েছে সব বর্ডার ক্রসিং। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে বেঁচে থাকবেন গাজার বাসিন্দারা, এটাই এখন মূল প্রশ্ন!
সূত্র: আল জাজিরা
/এআই
Leave a reply