কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ২৪ জন জাপানি সৈনিকের দেহাবশেষ ৮১ বছর পর ফিরিয়ে নিচ্ছে জাপান। এ নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর থেকে জাপানের ৭ সদস্যের একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল দেহাবশেষ উত্তোলনের কাজ শুরু করেছেন। তবে সমাধিতে মাথার খুলি, শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় পাওয়া যাচ্ছে।
কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত এই প্রাচীন ওয়ার সিমেট্রি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত বিশ্বের ১৩টি দেশের ৭৩৭ জন সৈনিককে এখানে সমাহিত করা হয়। এর আগে, ১৯৬২ সালে একজন সৈনিকের দেহাবশেষসহ সমাধির মাটি তার স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান।
কমনওয়েলথ গ্রেভইয়ার্ড কমিশন এই যুদ্ধ সমাধিক্ষেত্র রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে আসছে। জানা যায়, জাপানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই কাজে শুরু থেকেই সহায়তা করছেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক। কমনওয়েলথ গ্রেভইয়ার্ড কমিশনের পক্ষে সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন কান্ট্রি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর আবদুর রহিম। ২৪ নভেম্বরের মধ্যে এই কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
৭ জন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মধ্যে ৬ জন জাপানি ও একজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ইতোমধ্যে ১০ জনের দেহাবশেষ সমাধি থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
কুমিল্লার ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রিতে ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত ৭৩৮ জন সেনাকে সমাহিত করা হয়। সেখানে মোট ১৩টি বিদেশি যোদ্ধা রয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৫৭ জন, কানাডার ১২, অস্ট্রেলিয়ার ১২, নিউজিল্যান্ডের ৪, দক্ষিণ আফ্রিকার ১, অবিভক্ত ভারতের ১৭১, রোডেশিয়ার ৩, পূর্ব আফ্রিকার ৫৬, পশ্চিম আফ্রিকার ৮৬, মিয়ানমার ১, বেলজিয়ামের ১, জাপানের ২৪ এবং পোল্যান্ডের ১ জনের সমাধি রয়েছে।
সমাহিতদের মধ্যে মধ্যে ইসলাম ধর্মের ১৭২ জন, বৌদ্ধ ধর্মের ২৪ জন, হিন্দু ধর্মের ২ জন ও বাকিরা খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী।
প্রতি বছরের নভেম্বর মাসে কমনওয়েলথভুক্ত দেশের হাইকমিশনারসহ তাদের প্রতিনিধিরা এই সমাধিস্থলে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরের ৯ নভেম্বর ১৩ দেশের কূটনীতিকরা সেখানে শ্রদ্ধা জানান।
/এএস
Leave a reply