গাইবান্ধা প্রতিনিধি
দলের মনোনয়ন না পেয়ে ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় ফিরে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের বুকফাটা কান্না দেখে আঝোরে কাঁদলেন গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য (এমপি) অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ। বারবার চেষ্টা করেও কান্না থামাতে পারছিলেন না অনেকেই।
বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে ঢাকা থেকে সড়কপথে গোবিন্দগঞ্জে ফেরেন এমপি আবুল কালাম আজাদ। তার আসার খবরে দুপুর থেকেই দলীয় নেতাকর্মী, সমর্থক ছাড়াও হাজার হাজার নারী-পুরুষ দক্ষিণ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অপেক্ষা করতে থাকেন। আবুল কালাম আজাদ বাস থেকে নামার পর অনেক মানুষের উপস্থিতি দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন।
দক্ষিণ বাসস্টান্ড থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী কাঁদতে কাঁদতে পায়ে হেঁটে আবুল কালাম আজাদকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে পৌঁছান। এ সময় নেতাকর্মীরা ‘কালাম ভাই হারেননি/ কালাম ভাইয়ের মাটি, গোবিন্দগঞ্জের ঘাঁটি/ কালাম ভাই আছেন, কালাম ভাই থাকবেন/ অযোগ্যকে নৌকার মাঝি কেন/ কেন্দ্রীয় নেতারা কে কী করলেন জানতে চাই?’ এমন স্লোগান দেন।
পরে নিজ বাসার সামনে তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশে কথা বলতে গিয়ে আবারও কান্নায় ভেঙে পড়েন। আবেগাপ্লুত আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জনপ্রিয়তা আর যোগ্যতা থাকার পরেও দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। দল যোগ্য মনে করে একজনকেই মনোনয়ন দিয়েছে। দল ও জননেত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখেই তিনি এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন। তাই কষ্ট ভুলে নৌকার পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে। শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহবান জানান’।
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ে এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছি। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ থেকে মুক্ত, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিসহ গোবিন্দগঞ্জকে শান্তির জনপদে পরিণত করতে কাজ করেছেন। নিজের পরিবারের খোঁজ নিতে পারিনি, কিন্তু সবসময় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখে নিবেদিত ছিলাম। এখনো সবার পাশেই আছি এবং থাকব।’
এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন চৌধুরী। তিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু আবুল কালাম আজাদ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করে বিপুল ভোটে জয়ী হন
বর্তমানে আবুল কালাম আজাদ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এছাড়া তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য। এর আগে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন।
Leave a reply