বিশেষ রাজনৈতিক দল নয়, বাংলাদেশের মানুষের পাশে ভারতকে দাঁড়ানোর আহ্বান ফখরুলের

|

ভারতের প্রতি বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) লন্ডনের রয়েল রিজেন্সিতে ‘বিজয় দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক দলীয় সমাবেশে এ বার্তা দেন তিনি। দু’দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং পররাষ্ট্রনীতিতে ভালো ও সমান্তরাল অবস্থানের জন্য দিল্লির প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মির্জা ফখরুল।

বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। গণতন্ত্রের পথে ফিরতে, অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করবে বিএনপি- দেন সেই প্রতিশ্রুতিও। একইসাথে, সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিগত সরকার বাংলাদেশের যে ক্ষতি করে দিয়েছে, যে শ্বেতপত্র প্রকাশ হয়েছে তাতে বছরে ১৬ বিলিয়ন ডলার করে পাচার করা হয়েছে বলে উঠে এসেছে। চিন্তা করা যায়! একটা দেশের সরকার তারা দেশের সমস্ত সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ফোকলা করে দিয়েছে। কিছু নাই ভেতরে। তারা রাজনৈতিক যে কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। তিনটি নির্বাচনকে বেআইনিভাবে দখল করে নিয়েছিল।

ভুয়া তথ্য ও গুজব থেকে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান ফখরুল। ভারতের প্রতি বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধের আহ্বান জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় আমাদের সহযোগিতা করেছিল ভারত। আমরা সবসময় প্রত্যাশা করি ভারত বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়াবে। কোনো একটা বিশেষ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, একথা আমরা প্রত্যাশা করি।

তিনি বলেন, আজকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটা ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে দিচ্ছে কিছু মানুষ। বলা হচ্ছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। এই ফেইক একটা তথ্য, এই ডিজইনফরমেশন ছড়িয়ে দিয়ে আবারও একটা সমস্যা তৈরির পাঁয়তারা চলছে। এটি নিয়ে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমরা এই সমাবেশ থেকে ভারতকে অনুরোধ জানাতে চাই আপনি অনেক বড় দেশ কিন্তু তাই বলে বাংলাদেশ, যে দেশ যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে, যে সংগ্রাম করে লড়াই করে যে গণতন্ত্রকে আদায় করে নিয়েছে যারা বুকের রক্ত দিয়ে তাদের অধিকারকে আদায় করেছে তাদেরকে খাটো করে দেখে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ কখনোই তা মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল এসময় রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এই বিষয়ে সবাই আমরা একজোট থাকব, একমত থাকব। এবং আমরা অবশ্যই আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে অক্ষুণ্ন রাখার জন্য আমরা সবাই একজোট হয়ে আবার ঐক্যবদ্ধ হব। বলেন, আন্দোলনের সময় আমদের যেমন ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য ছিলো, সেরকম ঐক্য আবারও পুনর্গঠন করতে হবে ও টিকিয়ে রাখতে হবে।

বক্তব্যে দেশের বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতিসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের পর যতদ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজনের তাগিদ দেন ফখরুল। বলেন, আমরা মনে করি নির্বাচনী ব্যবস্থা, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক ন্যূনতম যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেগুলো করে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত। কারণ, আমরা আগেও বলেছি নির্বাচন যত দেরি হবে, সমস্যা তত বাড়তে থাকবে। তত বেশি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

সবশেষে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরানোর প্রত্যাশার কথা জানান বিএনপি মহাসচিব।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply