৪ ডিসেম্বর, বুধবার দিবাগত রাত। আরও একটি সম্ভাবনাময় সকালের শুরুর অপেক্ষায় কেউ কেউ ঘুমিয়ে পড়েছেন। কেউ আবার বিছানায় গা এলিয়ে নজর রাখছিলেন মোবাইলের স্ক্রিনে, তাদের কেউ কেউ নিশ্চয় ডিজিটালমাধ্যমে দিনের খবরগুলোয় চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিলেন। কিংবা ভিনদেশ থেকে বাংলাদেশের খবর জানতে চোখ রাখছিলেন কোনো বাংলাভাষী। যারা সঠিক সংবাদটি পেতে বেছে নিচ্ছেন বাংলাদেশের যমুনা টেলিভিশনের ডিজিটালমাধ্যমগুলো।
সঠিক সংবাদ পেতে প্রতিদিনই এই আস্থা রাখার তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন মানুষ। বুধবার রাতও এর ব্যতিক্রম নয়। তাই দর্শক-পাঠকের আস্থায় এই রাতে যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেল পৌঁছে গেছে আরও একটি মাইলফলকে। যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে এখন আড়াই কোটির বেশি সাবস্ক্রাইবার।
এই অগ্রযাত্রায় চ্যানেলটি দুই হাজার ১৪৮ কোটিবারের বেশি ভিউ হয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের ইতিহাসে যা বিরল। দ্রুততা ও সময়ের বিচারে এই অর্জন একটি রেকর্ডও বটে।
২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে যমুনা টিভি (Jamuna TV) নামের ইউটিউব চ্যানেলটি। বস্তুনিষ্ঠ ও বৈচিত্র্যময় কন্টেন্টের মাধ্যমে দ্রুততম সময়েই দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করে চ্যানেলটি। ৮ মাসেরও কম সময়ে ২০১৮ সালের ৩ আগস্ট স্পর্শ করে ১ লাখের মাইলফলক। পরের বছরই (২০১৯ সালের ৩০ মে) সেটি দশগুণ বৃদ্ধি পায়, ১০ লাখের অভিজাত ক্লাবে প্রবেশ করে যমুনা টেলিভিশন। তারপরের গল্প তো কেবল এগিয়ে যাওয়ার।
২০২০ সালের ১৫ জুলাই ৫০ লাখ সাবস্ক্রাইবের গৌরব অর্জন করে টিম যমুনা। স্বপ্নের ১ কোটি সাবস্ক্রাইবারের মাইলফলকে পৌঁছে বাইশের ৪ মার্চ! এরপর যেন গতি আরও বেড়ে চলে টিম যমুনার। আড়াই বছরের মাথায় পৌঁছে গেলো আড়াই কোটি সাবস্ক্রাইবারের ক্লাবে।
এরমধ্যে চব্বিশ যেন যমুনা টেলিভিশনের নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরার বছর। ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে যমুনা শব্দটি হয়ে উঠে মানুষের মুখে মুখে। যমুনার বস্তুনিষ্ঠ সংবাদে দর্শক-পাঠকের আস্থা ও ভালোবাসায় ভোটের পরপরই ২০ জানুয়ারি সংবাদভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেলের বিশ্ব চূড়ায় উঠে বাংলাদেশের এ গণমাধ্যম। তারও আগে তো বাংলাদেশের এক নম্বর ইউটিউব চ্যানেলের তকমা জুটিয়েছিল। সে সময় যমুনা টিভির ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার ছিল ১ কোটি ৬২ লাখ।
বিশ্বের সেরা হয়েও আত্মতৃপ্তিতে ভোগেনি টিম যমুনা। নিজেরা আরও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছে। সেই চেষ্টা তো দেশবাসী দেখেছেই।
জুলাই-আগস্টে আন্দোলনে সংবাদ পেতে বাংলাভাষী মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল যমুনা নিউজ। সে সময় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে এই গণমাধ্যম ছিল অবিচল। বাংলা ব্লকেড থেকে শুরু করে রংপুরে আবু সাঈদ হত্যার পর শিক্ষার্থীদের কমপ্লিট শাটডাউন ও একদফা কর্মসূচি, শেখ হাসিনার পতন, খালেদা জিয়ার মুক্তি, বিএনপির সমাবেশ, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন— প্রতিটি সংবাদ প্রকাশে আবেগ নয়, সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে মুন্সিয়ানার পরিচয় দিয়েছে টিম যমুনা। একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও এ সময় বাংলাদেশের এই টেলিভিশনের তথ্য ব্যবহার করে।
রংপুরে নিরস্ত্র শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে মারার ভিডিও বিশ্ববাসী দেখতে পায় যমুনার মাধ্যমে। দেশীয়র পাশাপাশি বিশ্ব গণমাধ্যমেও তখন যমুনার বরাতে আবু সাঈদকে গুলি করার ভিডিও বা চিত্র প্রকাশ করে। যেই ঘটনা, সংবাদ পুরো আন্দোলনকে নিয়ে যায় ভিন্ন মাত্রায়। যা মসনদে পর্যন্ত পরিবর্তন এনে দেয়।
যমুনার সংবাদ প্রকাশে এমন মুন্সিয়ানায় গণঅভ্যুথানের আগের দিন যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার ২ কোটিতে পৌঁছায়। তাদের আস্থা-ভালোবাসা এখানেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলে যমুনার বন্দনা। নগরীর দেয়ালে দেয়ালে রঙ তুলিতে আঁকা হয় যমুনার মাইক্রোফোন, লোগো, ওয়েবসাইটের ঠিকানা।
তাদের এই ভালোবাসার প্রতিদানে মাত্র চার মাসের ব্যবধানে যমুনার ইউটিউব চ্যানেল পেলো আরও ৫০ লাখ সাবস্ক্রাইবার। তাতেই ৫ ডিসেম্বর আড়াই কোটির এই মাইলফলক অর্জন।
এমন অর্জনের প্রতিক্রিয়ায় যমুনার দর্শক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ। তিনি বলেন, বস্তুনিষ্ঠতা টিম যমুনার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। মানুষের তথ্যের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বৈচিত্র্যের বিষয়টিতেও গুরুত্ব দিয়ে থাকি। সেই অঙ্গীকার নিয়েই মানুষের কাছে সর্বশেষ তথ্যটি সবার আগে পৌঁছে দেয় যমুনা টেলিভিশন। আড়াই কোটি মানুষের এ ভালোবাসা আমাদের সার্থকতার প্রতিচ্ছবি ও পথচলার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
টিম যমুনা মনে করে, দর্শক, পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীরাও এই এগিয়ে যাওয়ায় সারথী। তারা যমুনায় আস্থা রেখেছেন, ভালোবেসেছেন। তাই তাদের প্রতি রইলো টিম যমুনার অভিবাদন। এই ভালোবাসা টিম যমুনাকে মনে করিয়ে দেয় আরও দায়িত্বশীল হওয়ার কথা। নিজেকে নিজের আরও ছাড়িয়ে যাওয়ার গল্প বলার কথা। হয়তো তাদের কেউ কেউ টিম যমুনার উদ্দেশে আনমনে গাইছেন আইয়ুব বাচ্চুর গাওয়া—
বহুদুর যেতে হবে
এখনও পথের অনেক রয়েছে বাকি।
ভালোবাসায় বিশ্বাস রেখো
হয়তো অচেনা মনে হতে পারে আমাকে।
তুমি ভয় পেয়ো না, তুমি থেমে যেও না…
ভালোবাসা দেয়া দর্শক-পাঠকদের উদ্দেশে টিম যমুনা আশ্বস্ত করতে চায়— আমাদের মনে বাজতে থাকে, ‘ক্লান্তি আমায় ক্ষমা করো প্রভু…’। আমরা একটা উদ্যোমী টিম। এই উদ্যোম কাজে লাগিয়েই লক্ষ-কোটি মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চাই।
/এমএন
Leave a reply