স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, মুন্সিগঞ্জ:
মুন্সিগঞ্জে প্রথম শ্রেণী থেকে চতুর্থ শ্রেণীর নতুন বইয়ের জন্য শিশু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১শ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়নের বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ অর্থ আদায়ের ঘটনা ঘটে বলে দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। তবে, টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো.শামসুল ইসলাম সিকদার।
বিদ্যালয়টিতে পড়ুয়া বিভিন্ন শ্রেণির অন্তত ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী এবং কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা হয় যমুনা টিভির। এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তাদের অভিযোগ, ছাড়পত্র দিতেও নেয়া হয়েছে দুইশত টাকা। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বইসহ সরকার বিনামূল্যে প্রাথমিকে লেখাপড়ার সুযোগ দিচ্ছে।
অভিযোগকারীরা জানান, বিনোদপুর সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেউ নিয়ম মানছেন না। নতুন বই দেয়ার জন্য প্রতিটি শ্রেণীর এক একজন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নিয়েছেন শিক্ষকরা। এছাড়াও যারা এবার এখান থেকে পঞ্চম শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়ে উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তি হচ্ছেন তাদের ভর্তির জন্যও পঞ্চম শ্রেণীর ছাড়পত্র দরকার। যেসব শিক্ষার্থীরা ছাড়পত্র নিতে এসেছেন তাদের কাছ থেকেও ২০০ টাকা করে নিয়েছেন শিক্ষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছর বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণীতে ১৩৫ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১৩০ জন, তৃতীয় শ্রেণীতে ১১৫ জন,চতুর্থ শ্রেণীতে ১১৫ এবং পঞ্চম শ্রেণীতে ৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এদের মধ্যে গত দুইদিনে প্রথম শ্রেণীর ৭০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীর ৮২ জন, তৃতীয় শ্রেণীর ১০১ জন শিক্ষার্থী নতুন বই নিয়েছেন। তবে শিশু ও পঞ্চম শ্রেণীর কোন শিক্ষার্থীই বই পায়নি। দুই একদিনের মধ্যে পাবেন নতুন বই তারা।
নতুন বই পাওয়া চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী বলেন, গত বুধবার নতুন বই দেয়ার কথা বলে আমাদের বিদ্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়। পরে স্যার ও ম্যাডামরা আমাদের কাছে ১০০ টাকা করে নেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়টির তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী অভিভাবক বলেন, গ্রামের স্কুল, স্যারেরা যা বলে তাই আমরা বিশ্বাস করি। আমরা জানতাম সরকারি কোন খরচ নাই। তবে কি কারণে ১০০ টাকা নিচ্ছে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, ‘বই দিবো খরচ আছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, স্কুলের আয়া-খালারে দিবো।’
পঞ্চম শ্রেণী থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী আব্দুল খালেক বলেন, আমি বিনোদনপুর রামগোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। সেখানে প্রাইমারী স্কুলের টিসি চায়। টিসি নিতে আসলে ২০০ টাকা নিয়েছে শিক্ষকরা।
তবে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল ইসলাম সিকদার টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, বই এবং ছাড়পত্র দিয়ে কারো কাছ থেকে কোন ধরনের টাকা নেয়া হয়নি। যারা বলেছে তারা মিথ্যা বলেছে।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল মোমেন মিয়া বলেন, নতুন বই দেয়া এবং সনদ দেয়া বাবদ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এক টাকাও নেয়ার সুযোগ নেই। যদি স্কুলের শিক্ষকরা এমন কাজ করে থাকেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
/এমএইচ
Leave a reply