ফেনী প্রতিনিধি :
ফেনী পুরাতন কারাগার থেকে নতুন কারাগার আয়তনে ৫ গুন বড়। ১১৬ টি কারারক্ষীর পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন ৫৩ জন। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকলেও শনিবার দুপুরে জেলা সদরের রানীরহাটে সুপরিসরে নবনির্মিত ফেনী জেলা কারাগারে বন্দী স্থানান্তর করা হয়েছে।
এর আগে বিগত বছরের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গনভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলার বৃহৎ এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে শহরতলীর কাজিরবাগ মৌজায় সাড়ে ৭ একর জায়গায় নতুন জেলা কারাগার নির্মান কাজ শুরু হয়। ৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৮টি ভবন নির্মিত হয়েছে। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত এ কারাগারে ২টি ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা, ২.৫০ কেভি এ বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন, ১০ কিলোওয়াট সৌর বিদ্যুৎ, ২০ কেভি জেনারেটর ছাড়াও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা, অভ্যর্থনা মঞ্চ , প্যারেড গ্রাউন্ড, আন্ডারগ্রাউন্ড ওয়াটার রিজার্ভার রয়েছে। এ কারাগারে বন্দী ধারন ক্ষমতা রয়েছে ৩৫০ জন।
কারা সূত্র জানায়, শনিবার ভোর ৫টা থেকে বন্দী স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে দুপুরের মধ্যে সম্পন্ন হয়। ৮ শতাধিক বন্দীকে ৫টি ভ্যান গাড়ীতে করে স্থানান্তর করা হবে। ১টি গাড়ীতে ৪০ জন বন্দী বহন করা হবে। বন্দী স্থানান্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কারারক্ষী ছাড়াও পুলিশের শখানেক সদস্য, র্যাব, সাদা পোষাকের পুলিশ ও গোয়েন্দা নজরদারী থাকে।
সূত্র আরো জানায়, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। বন্দী স্থানান্তর প্রক্রিয়া তদারকি করেন চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি প্রিজন এ.কে.এম ফজলুল হক।
ফেনী কারাগারের সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের বলেন, নবনির্মিত নতুন কারাগার স্থানান্তরে বন্দীদের দূর্ভোগ লাগব হবে। তবে কারারক্ষী স্বল্পতায় নতুন কারাগারে নিরাপত্তা শংকার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
‘পুরাতন কারাগারে বন্দীদের প্রশিক্ষণ’
১৮৭৬ সালে ফেনী মহকুমা হওয়ার পর ফেনী শহরের রাজাঝির দিঘীর দক্ষিণ পূর্বকোনে বাঁশের বেড়া দিয়ে ফেনীতে প্রথম হাজতখানা স্থাপিত হয়। শহরের কেন্দ্রস্থল হওয়ায় চার তলার সুউচ্চ লাল বিল্ডিংটি সবার চিরচেনা। জানালার ফাঁক দিয়ে বন্দীদের চিৎকার-চেঁচামেচিতে ওই সড়কের পথচারীদের নজর পড়তো। আশপাশে ট্রাংক রোড, পৌরসভা ও সরকারি কলেজ থাকলেও সড়কটি জেল রোড হিসেবেই সর্বাধিক পরিচিত।
কারা সূত্র জানায়, কারা অভ্যন্তরে রয়েছে ৪ তলা বিশিষ্ট লাল ভবন, দুটি টিনশেড ভবন ও নারীদের জন্য একতলা টিনশেড ভবন রয়েছে। এসব ভবনে ধারন ক্ষমতা রয়েছে ১৭২ জনের। নতুন কারাগারে বন্দী স্থানান্তর হবার ফলে পুরাতন কারাগারকে ‘কারাগার-২’ হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সূত্র আরো জানায়, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কারাবন্দীদের আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করে দক্ষ জনশক্তিতে পরিনত করার মাধ্যমে কারাগারসমূহকে সংশোধনাগারে রুপান্তর করার লক্ষে নতুন নির্মিত কারাগারকে-১ এবং পুরানো কারাগারকে কারাগার-২ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
Leave a reply