নারীদের কাছে গাড়ি ভাড়া না দিলে মালিকদের শাস্তির বিধান করেছে সৌদি আরব। সৌদির প্রভাবশালী গণমাধ্যম আল -হায়াত জানিয়েছে, সম্প্রতি দেশটির সরকারি সংস্থা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অথরিটি এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতিদিন আমাদের কাছে অসংখ্য অভিযোগ আসছে যে, গাড়ি ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদেরকে উপেক্ষা করা হয় এবং নারীদের বিশাল অংশ এ ব্যাপারে একটা বিহিত করার আবেদনও জানিয়েছে। এজন্য শৃঙ্খলার স্বার্থে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, নারীদের গাড়ি ভাড়া না দিলে মালিকপক্ষকে শাস্তির সম্মুখীন করা হবে।
এ প্রসঙ্গে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অথরিটির মুখপাত্র আব্দুল্লাহ সায়িল আল-মুতাইরী আল-হায়াতকে বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নিরাপত্তা বিষয়ক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকার পরও মালিকপক্ষ নারীদের গাড়ি ভাড়া না দেওয়ার কোনো কারণ আমার বোধগম্য নয়। এ ক্ষেত্রে কোন অজুহাত ছাড়াই যদি কোন নারীকে গাড়ি ভাড়া না দেওয়া হয় তাহলে মালিকপক্ষকে ১ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদির ক্ষমতায় অংশীদার হওয়ার পরে ‘মধ্যমপন্থী ইসলাম’ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক সৌদি আরব প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এরই প্রেক্ষিতে গত বছরের শুরুর দিকে দেশটিতে নারীদেরকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের বৈধতা প্রদান করা হয়।
সৌদি যুবরাজ দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করতে ‘ভিশন-২০৩০’ নামে একটি সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেন। ২০৩০ ভিশনের মধ্যে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
গত বছর সেপ্টেম্বরে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ এক ডিক্রিতে নারীদের রাস্তায় গাড়ি চালানোর অনুমতি দেন। তিনি ঘোষণা দেন ২০১৮ সালের ২৪ জুন থেকে নারীরা রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারবেন। প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে জুন মাসে নারীদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে শুরু করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। সহস্রাধিক নারীকে গাড়ির লাইসেন্স দেয়া হয়।
নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া হলেও দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে নারীদের গাড়ি ভাড়া দেওয়ার প্রচলন এখনো গড়ে ওঠেনি, সে প্রেক্ষিতে নতুন এ ঘোষণা দিল সৌদি সরকার।
Leave a reply