কলকাতা পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিবিআই) আকস্মিক হানা দেয়া নিয়ে রোববার সন্ধ্যা থেকে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এ ঘটনার পরপরই কলকাতার লাউডন স্ট্রিটে পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপিপ্রধান অমিত শাহ মিলে পশ্চিমবঙ্গে অভ্যুত্থান করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পরিস্থিতি জরুরি অবস্থার থেকেও ভয়াবহ। দেশের সংবিধান বাঁচাতে মেট্রো চ্যানেলে ধর্মঘটে বসবেন বলেও জানান মমতা।
এদিকে রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাট করার প্রমাণ আছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সিবিআই প্রধান এম নাগেশ্বর রাও।
প্রসঙ্গত, সিবিআইয়ের ডিএসপির নেতৃত্বে ৪০ জনের একটি দল কলকাতার লাউডন স্ট্রিটে পুলিশ কমিশনারকে জেরা করতে তার বাড়ির সামনে যায়। সেখানে কমিশনারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের বাধা দেন। সিবিআইয়ের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চান তারা।
এসময় সিবিআই কর্মকর্তা জানান, তাদের কাছে প্রযোজনীয় কাগজপত্র রয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পরেই কলকাতা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিবিআই কর্মকর্তাদের আটক করে সেক্সপীয়র রোড থানায় নিয়ে যান।
একপর্যায়ে সিবিআই কর্মকর্তাদের সঙ্গে কলকাতা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে রীতিমত ধস্তাধস্তি হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সিবিআই কর্মকর্তাদের মুক্ত করতে কেন্দ্রীয় বাহিনী যে কোনো সময় অভিযানে নামতে পারে।
এদিকে সিবিআই কর্মকর্তাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে যান। সেখানে কয়েকজন সিনিয়র আইপিএস অফিসারও ছিলেন। পরিস্থিতি মোকাবিলার পরবর্তী কৌশল ঠিক করতে তারা বৈঠকে বসেন বলে সূত্রের খবর।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী সকালে টুইট করে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে নিয়ে মিডিয়ায় প্রকাশিত বিভ্রান্তিকর খবরের ব্যাপারে উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি মোদি সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির সমালোচনা করে রাজীব কুমারকে বিশ্বের একজন সৎ ও সাহসী অফিসার বলে বর্ণনা করেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার থেকে শোনা যাচ্ছিল সারদা এবং রোজভ্যালি চিট ফান্ড মামলায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে জেরা করতে চায় সিবিআই।
সিবিআইয়ের একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছিল, সিবিআই কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে- কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে একাধিকবার হাজিরার জন্য নোটিশ পাঠানো হলেও তিনি আসেননি। তাই সর্বশেষ উপায় হিসেবে তাকে গ্রেফতারের মতো চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলেও ওই সূত্র পিটিআইকে জানিয়েছিল।
Leave a reply