পিরোজপুরে কথিত ‘হারকিউলিস কাণ্ডে’ উল্টো বিপাকে ধর্ষণের শিকার পরিবার। ভুক্তভোগীকে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা। ধর্ষণে অভিযুক্ত দুই যুবককে গুলি করে হত্যার পর তার দায় চাপানো হচ্ছে ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগীদের ওপরই।
পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার নদমূলায় সম্প্রতি ধর্ষণের শিকার হন এক মাদ্রাসাছাত্রী। এর কয়েকদিন পর অভিযুক্ত দুই ধর্ষকের লাশ পাওয়া যায়। তাদের লাশের সাথে একটি নোট যুক্ত করা ছিল। তাতে লেখা ছিল ‘ধর্ষকের পরিণতি ইহাই। ধর্ষকরা সাবধান- হারকিউলিস।’
এরপরই দেশব্যাপী আলোচনায় আসে কথিত হারকিউলিস। সাধারণ মানুষদের অনেকে অব্যাহত বিচারহীনতার মাঝে এমন ‘বিনা বিচারে ধর্ষকের হত্যাকাণ্ড’কে স্বাগতই জানাচ্ছেন। যদিও এই হত্যাকাণ্ডগুলো আরও বড় অভিশাপ হয়ে এসেছে ধর্ষিতা সেই মেয়েটি ও তার পরিবারের জন্য। তাদের বাড়ি এখন মানবশূন্য। পালিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো পরিবারটি। লজ্জা আর আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।
দুই অভিযুক্ত কথিত হারকিউলিসের হাতে খুন হওয়ার পর দুটি মামলা দায়ের হয়েছে। সেগুলোতে অন্যদের সাথে আসামি করা হয়েছে ধর্ষিতার বাবাকেও।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, লজ্জায় আর ভয়ে আমরা এলাকায় যেতে পারছি না। অনেকে হত্যার জন্য আমাদেরকে সন্দেহ করছে। এখন উল্টো আমাদেরকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
১২ বছর বয়সী ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা বলেন, আমরা বিচার চেয়েছিলাম। কারো লাশ চাইনি।
শুধু এই পরিবারটি নয়; পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ভুক্তভোগীদের আইনের আশ্রয় নিতে সহায়তাকারী এক শিক্ষকও। নদমুলা দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মিজানুর রহমান মিঠু বলেন, আমাকে এখন হুমকি দেয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে এসব হত্যায় আমার হাত আছে।
যদিও পুলিশ বলছে, ভুক্তভোগীর বাবাকে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আসামি করা হলেও এই মামলা দুটিতে কাউকে হয়রানি করা হবে না।
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি হারকিউলিস এর রহস্য উদঘাটনের। কাউকেই হয়রানি করা হবে না। আশা করি দ্রুতই আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।
Leave a reply