রাজধানীর চকবাজারে চারতলা একটি ভবনসহ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হওয়ার পর ৯ ঘণ্টা পরেও তারা পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। ভবনটিতে প্লাস্টিক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ ছিল।
বাংলাদেশে ভবনধস ও অগ্নিকাণ্ড একটি অহরহ ঘটনাই বলা যায়। বিশেষ করে শত শত কোটি ডলারের গার্মেন্ট কারখানা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
শিথিল ভবননীতিমালা ও অরিক্ষতভাবে দাহ্য পদার্থ রাখায় এমনটা ঘটছে।
রানা প্লাজা ধস
রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারে ২০১৩ সালের এপ্রিলে ৯ তলা রানাপ্লাজা ধসে ১১৩০ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। বিশ্বের শিল্প কারখানা দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে ভয়বহ একটি হচ্ছে এই রানা প্লাজার ঘটনা।
এতে আরও দুই হাজার লোক আহত হয়েছেন। পণ্য উৎপাদনে জড়িত দরিদ্র শ্রমিকদের সুরক্ষা দিতে পশ্চিমা শীর্ষ ফ্যাশন ব্রান্ডগুলোর ব্যর্থতাই ফুটে উঠেছে এতে।
ভবনটি নিরাপদ দেখাতে মিথ্যা দাবির অভিযোগে ২০১৬ সালে মালিক সোহেল রানাসহ ৩৮ জনকে বিচারের মুখোমুখি করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কৌঁসুলিরা বলছে, মামলাটি রায় পর্যন্ত যেতে অন্তত পাঁচ বছর লাগবে।
রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ড
২০১০ সালে নিমতলীতে ঢাকার সবচেয়ে প্রাণঘাতি দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ১১৭ জন নিহত হন। রাজধানীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই অগ্নিকাণ্ড ছড়িয়ে পড়লে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
একটি রাসায়নিক গুদাম থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। এতে কয়েকটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট ভবন ও দোকানপাট ধ্বংস হয়ে যায়।
কারখানায় অগ্নিকাণ্ড
২০১২ সালের নভেম্বরের একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ৯ তলা ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ১১১ শ্রমিক নিহত হন। পরবর্তীতে তদন্তে দেখা গেছে, নাশকতার কারণে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছিল।
আর কারাখান ব্যবস্থাপক শ্রমিকদের আগুন থেকে পালাতে বাধা দিলে এত বেশি লোক নিহত হন।
আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া এক শ্রমিক বলেন, আমি দোতলার একটি এগজোস্ট ফ্যান ভেঙে কারখানার কাছের একটি টিনশেডে ঝাঁপ দিই। আমার হাত ভেঙে গেলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছি।
প্যাকেজিং কারখানায় আগুন
২০১৬ সালে রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে একটি প্যাকেজিং কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের অগ্নিকাণ্ডে ৩১জন নিহত হন। ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক গুদামের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল বলে ধারনা করা হচ্ছে।
ত্রুটিপূর্ণ বয়লার
২০১৭ সালের জুলাইয়ে একটি কারখানায় বয়লার বিস্ফোণে ১৩ জন নিহত হন। এতে একটি ছয়তলা ভবনের একটি অংশ ধসে পড়ে। সেখানে কর্মরত পাঁচ হাজার শ্রমিকের অধিকাংশ তখন ঈদের ছুটিতে ছিলেন।
Leave a reply