নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসনে আরা বীণাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করার আদেশ বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মুহাম্মদ শাহীন ইমরান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ওএসডি বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে।
এর আগে হোসনে আরা বেগম বীনাকে ওএসডি করার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
গত ৮ ফেব্রুয়ারির রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে বেশ আলোচিত ইউএনও হোসনে আরা বেগম বীণা।
সেদিন ফেসবুকের এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে তিনি প্রশ্ন রাখেন, আমার নিষ্পাপ সন্তানের কী দোষ ছিল?
তিনি লেখেন, দীর্ঘ ৯ বছরের দাম্পত্য জীবনে প্রথম মা হয়েও সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরতে পারছেন না। জন্মের দিন থেকেই হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে অপরিপক্ব শিশুটিকে।
তিনি জানান, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় নির্বাচনের দায়িত্ব পূর্ণরুপে পালন করেছেন, তবু তাকে মানসিক নির্যাতন সইতে হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত ওএসডি করা হয়েছে।
বিষয়টি মানসিক ও শারীরিকভাবে তার ওপর প্রভাব ফেললে নির্ধারিত সময়ের আগেই গর্ভের সন্তান জন্ম দেন তিনি। এ কারণে সন্তান আজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে অসুস্থ অবস্থায় আছে বলে অভিযোগ করেন হোসনে আরা বেগম বীণা
বীনাকে ওএসডি করার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) শেখ ইউসুফ হারুন জানিয়েছিলেন, হোসনে আরা বীণাকে টেনশনমুক্তভাবে বিশ্রামে থাকতেই ওএসডি করা হয়েছে।
তিনি বলেছিলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি আমরা দেখেছি। সামনে যেহেতু উপজেলা নির্বাচন, মূলত তার ওপর মানসিক চাপ কমাতে এবং টেনশনমুক্তভাবে বিশ্রামে থাকতে পারেন সে জন্য ওএসডি করা হয়েছে। অন্য কোনো কারণ নেই।’
এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি অন্তঃসত্ত্বার কারণে ইউএনও হোসনে আরা বীণাকে ওএসডি করায় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদ সদস্যরা।
এর পর বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে পড়ে।
১১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহাম্মদকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর ২১ দিনের মধ্যে হোসনে আরা বীনার ওএসডি বাতিল করা হলো।
(সূত্র: যুগান্তর)
Leave a reply