নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কালাইয়ে আ’লীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষ: নিহত ২ আহত ১০

|

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইউ’পি চেয়ারম্যানের সমর্থিত প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার দ্বন্দ্বে নির্বাচনের পর সহিংসতায় বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সাথে ইউ’পি চেয়ারম্যানের লোকজনদের সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে।

শনিবার দিবাগত রাতে কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের মোসলেমগঞ্জ বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ১১৩ রাউন্ড শর্টগানের রাবার বুলেট ছোঁড়ে।

ওই ঘটনায় আহতদের পুলিশ ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে। কালাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাতেই গুরুতর আহত আফতাব উদ্দিন (৫৫) এবং রতন মহন্ত (৪৫) নামে দুই জনকে আবার বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। আফতাব উদ্দিন হাসপাতাল যাওয়ার পথে এবং রতন মহন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর রাতে বগুড়া শহিদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়।

শনিবার রাত থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বাজার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকেলে বিজয়ী উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থক উদয়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নয়ন চৌধুরী তার লোকজনদের নিয়ে ইউ’পি চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলীর সমর্থকদের বাজারে অবস্থিত বেশ কয়েকটি দোকান ঘর ভাংচুর ও কয়েকজনকে মারপিট করে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতে ওয়াজেদ আলী ও লজিক চেয়ারম্যান তাদের লোকজনদের নিয়ে মোসলেমগঞ্জ বাজারে উপজেলা চেয়ারম্যানের এক সমর্থককে মারপিট করে।

নিহত আত্তাবের ছেলে রব্বানী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমরা গরিব মানুষ। বাবা হাটের শ্রমিকের কাজ করে। আজ থেকে আমাদের সবকিছুই শেষ হয়ে গেল। যারা আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তাদের শাস্তির দাবী করছি।

এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন অভিযোগ করে বলেন, ওয়াজেদ ও লজিকসহ তার লোকজন পিছন থেকে আক্রমণ করে আমার ২ জনকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে এবং আরও ১০ জন আহত হয়েছে। এর দায় পুরোটাই ওদেরকে নিতে হবে।

উদয়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী জানান, কালাই উপজেলা চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন তাকে মারার উদ্দেশ্যেই অস্ত্র স্বস্ত্র সজ্জিত হয়ে মোসলেমগঞ্জ বাজারে আসে এবং ঘোষণা দেয় ওয়াজেদেও কল্লা কেটে নাও এই খবর পেয়ে স্থানীয় জনতা হামলাকারীদের প্রতিহত করেছে।

কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ খান জানান, উপজেলা নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মোসলেমঞ্জ বাজারে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ২ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ১১৩ রাউন্ড শর্টগানের রাবার বুলেট ছোঁড়ে। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে মামলা হলে আসামী গ্রেফতারের অভিযান চালানো হবে।

এদিকে রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার রশিদুল হাসান। নিহতদের লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলে রতনকে দাহ এবং আফতাবের লাশ দাফন করে তার স্বজনরা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply