স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জে ৫ বছরের এক শিশু নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যান ভাংচুর করে। ইট পাটকেলের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহন হন। শিশু সুজয় দেবনাথ হত্যায় জড়িত সন্দেহে বিক্ষুব্ধ জনতা তার চাচা-চাচীকেও মারধর করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার কাকুরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গ্রামের ইতালী প্রবাসী সঞ্জয় দেবনাথের ছেলে সুজয় দেবনাথ সোমবার দুপুরে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। ৪ দিন পর বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশের একটি পুকুরে অর্ধগলিত মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।
সুজয়ের লাশ উদ্ধারের পর থেকেই শত শত গ্রামবাসী উত্তেজিত হয়ে ওঠে। হত্যাকান্ডে সুজয়ের আপন চাচা রঞ্জিত দেবনাথ, চাচী নিপা দেবনাথ জড়িত বলে শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। চাচা-চাচী দরজা বন্ধ করে ঘরে লুকিয়ে থাকে। বিক্ষুদ্ধ গ্রামবাসী তাদের বের করে মারধর শুরু করে।
এসময় পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে গ্রামবাসী আরো উত্তেজিত হয়ে পুলিশের দুটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করে। তাদের ইটপাটকেলের আঘাতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে সঞ্জয় দেবনাথ ইতালি থাকেন। সম্প্রতি তিনি ছুটিতে বাড়ি আসেন এবং প্রায় ২০ দিন আগে আবার ইতালী চলে যান। গত সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ছেলে সুজয়কে বাড়িতে রেখে মা বাসন্তী দেবনাথ পুকুরে গোসল করতে যান। গোসল সেরে বাড়িতে এসে সুজয়কে না পেয়ে তিনি বাড়ির আশপাশ এবং গ্রামের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। কোথায় শিশুটির খোঁজ না পেয়ে ওই দিনই চাচা রঞ্জিত দেবনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় চার বছর আগে নিহত শিশু সুজয়ের বোনকে পানিতে ফেলে হত্যা করা হয়। সম্পদের লোভে চাচা-চাচী শিশু সুজয়কেও হত্যা করে লাশ পানিতে ফেলে দেয়। এ কারণে গ্রামের অধিকাংশ লোকজন তাঁদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা করেন।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হানিফ সরকার বলেন, সঠিক সময় পুলিশ না গেলে যাদের বিরুদ্ধে সুজয় হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে উত্তেজিত লোকজনের কারণে তাদের জীবন যেতে পারতো।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুজয়ের চাচা রঞ্জিত দেবনাথ, চাচী নিপা দেবনাথ, দাদী মায়ারানি দেবনাথ, চাচাতো ভাই মিলন দেবনাথ ও চাচাতো বোনকে আটক করা হয়েছে। শিশুটিকে হত্যার অভিযোগে পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা করা হবে। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশকে মারধর, গাড়ি ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাঁধাদানের অভিযোগে অপর মামলাটি করা হবে।
Leave a reply