বিদ্যালয়ের পাশেই একটি ইটভাটা। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় শিক্ষার্থীদের শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। এমন সমস্যার মাঝেই আরও একটি ভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাঁচার আকুতি জানিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি লিখে ওই বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী। শিক্ষার্থীর আবেগঘন চিঠিটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। পরে ভাটার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চিঠিটি ভাইরাল হওয়ার পর ভাটাটির কার্যক্রম আপাতত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
গতকাল রাত ১ টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ফায়ার ব্রিগেড পানি দিয়ে ভাটার আগুন নিভিয়ে দেওয়া হয়েছে আলোচিত সেই ইটভাটার আগুন।
পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী মায়িশা মনওয়ারা মিশুর লেখা ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মাননীয় ডিসি স্যার দিনাজপুর, ছালাম নেবেন। আমরা দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ি। আমাদের স্কুলের পাশে বিপ্লব নামের একজন লোক ইটভাটা দিয়েছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আমাদের শ্বাসকষ্ট হয়। পরিবেশের ক্ষতি হয়। চোখ জ্বালা করে। এখন আবার স্কুলের পাশে মুক্তা নামের এক লোক আরেকটি ইটভাটা দিতেছে। তাহলে আমাদের আরও ক্ষতি হবে। আমরা কীভাবে বাঁচবো? আপনি আমাদের বাঁচান।’
সরেজমিন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, পার্বতীপুর-দিনাজপুর সড়কের পাশেই গড়ে উঠেছে ইটভাটাটি। ভাটার চিমনি থেকে কয়েক গজ দূরেই ভূট্টাক্ষেত। তার কয়েকশ গজ দূরে রয়েছে আরও একটি ইটভাটা। দুই ভাটা থেকে দেড় থেকে দুইশ গজ দূরে হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হক জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বুধবার বিকেল ৩ টায় পার্বতীপুরের ওই ইটভাটায় গিয়ে কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায় সেটির রিট পিটিশন রয়েছে। পরে ভাটা মালিককে বুঝিয়ে আপাতত ইটভাটাটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্বিতী শ্রেণির শিক্ষার্থী মায়িশা মনওয়ারা মিশুর ইটভাটা বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে লেখা একটি চিঠি দৃষ্টিগোচর হয়। পরে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হককে ভাটাটি বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন থাকায় আইনগতভাবে ভাটাটি বন্ধ করা না গেলেও পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির কথা বিবেচনা করে ভাটা মালিককে উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে আপাতত ইটভাটাটি বন্ধ রাখা হয়।
তিনি জানান, পরবর্তীতে আইনগত বিষয়ে বিবেচনা করে ভাটাটির ব্যাপারে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যমুনা অনলাইন/ইএ
Leave a reply