কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা বরকতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুকুরের জায়গাটি ছাত্রলীগের পর এবার মাদ্রাসার উন্নয়নের নামে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। দেয়াল দিয়ে পুকুরের পাড় বেধে বিশেষর আনসার ফিল্ড নুরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার নামে দোকানঘর নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে। এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে অবস্থিত বেলগাছা বরকতিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে ১ একর ৬৯ শতক এবং বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের নামে ১ একর ৩ শতক জমি রয়েছে। এই জমির মধ্যে পুকুর রয়েছে ৫০ শতক উপর। এই পুকুরের দেয়াল করে ঢালের মাটি ভরাট করে মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি তাদের বিরত রাখার চেষ্টা করলেও তা কর্ণপাত না করেই চলছে নির্মাণ কাজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, কয়েক মাস আগে স্থানীয় ছাত্রলীগ নামধারী যুবকেরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় অস্থায়ীভাবে এখানে ঘর তুলে জায়গার দখল নেয়। পরে পুরো জায়গাটি দখলে নিতে স্কুল বন্ধের সময় নির্মাণ কাজ শুরু করে। এবার মাদ্রাসার উন্নয়নের কথা বলে চলছে পুকুর ভরাটের কাজ। এই জায়গা নিয়ে যেকোন মূহুর্তে সংঘর্ষের আশংকা করছেন সাধারণ মানুষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী জানান, বিদ্যালয়ের নামে ১ একর ৬৯ শতক জমির মধ্যে ২৭ শতকে স্কুল ভবন, ১ একর ২ শতকে মাঠ এবং ৪০ শতক পুকুরে রয়েছে। মাদ্রাসা নামে রয়েছে ২৫ শতক জমি। অথচ পুকুরে তাদের কোন জমি না থাকলেও উন্নয়ন করার অযুহাত দেখিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জোরে পুকুরে দেয়াল দিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করছে। ভবিষ্যতে বিদ্যালয়ের পাঠদানসহ খেলাধুলায় বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডা: রশীদুল ইসলাম জানান, তারা অবৈধভাবে স্কুলের ক্রয়কৃত জায়গায় দেয়াল দিয়ে দোকানঘর করার পরিকল্পনা করছে। আজ মাদ্রাসার নামে দখল হবে, কাল অন্য জন এসে দখল করবে। এমনি করে বিদ্যালয়ের পুকুরটি বে-দখল হয়ে যাবার আশংকা রয়েছে।
বিশেষর আনসার ফিল্ড নুরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক আক্কাছ আলী পুকুরে দেয়াল দিয়ে দোকানঘর নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দুটি প্রতিষ্ঠানেই জনগণের কল্যাণের জন্য। দোকান হলে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের কাজে লাগবে। এনিয়ে কারো মাঝে কোন দ্বিধাদ্বন্দ নেই। এলারকার ৯৮% মানুষ দোকানঘর নির্মাণের পক্ষে।
এই বিষয়ে বেলগাছা ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান বলেন, পুকুরের জায়গায় স্কুল এবং ইউনিয়ন পরিষদের জায়গা রয়েছে। পুকুরের পাড় যেন ভেঙ্গে না পড়া এবং মাদ্রাসার উন্নয়নের দেয়াল দিয়ে কিছু দোকানঘর হবে। এতে করে কেউ স্কুলের জায়গা দখল করার চেষ্ঠা করে আমি এক ইঞ্চিও জায়গা দখল করতে দেবো না।
Leave a reply