নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গেছে বাঁধ। ডুবে গেছে সড়ক। রেললাইনেও পানি উঠে গেছে কোন কোন জায়গায়। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। মাস খানেকের ব্যবধানে দু’বার বন্যায় চরম বিপাকে এসব অঞ্চলের মানুষ।
গত ক’দিন ধরেই মুখ ভার আকাশের। সাথে যোগ হয়েছে পাহাড় থেকে আসা ঢল। সবমিলিয়ে সুরমার পানি বাড়ছে হু হু করে। সুনামগঞ্জের সদর, তাহিরপুর ও বিশম্ভরপুরের নিম্নাঞ্চল এরইমধ্যে ডুবে গেছে বন্যার পানিতে। ব্যাহত হচ্ছে সড়ক যোগাযোগ। চরম বিপাকে জেলার লাখো মানুষ।
দিনাজপুরে পূণর্ভবা নদীর পানির তোড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে শহররক্ষা বাঁধে। পানি ঢুকতে শুরু করেছে শহরে। এরইমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় কোমরপানি। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন অংশ সংস্কারে কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
যমুনার পানি বেড়ে সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার ২৭টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম।
কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় প্লাবিত হয়েছে সদর, ফুলবাড়ী, রাজারহাট ও নাগেশ্বরীর বিস্তীর্ণ এলাকা। কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়কে পানি উঠে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে ।
চার দিনের টানা বর্ষণে নীলফামারীর সৈয়দপুরের খড়খড়িয়া নদীর বাঁ তীরে পশ্চিম পাটোয়ারীপাড়া এবং বসুনিয়া এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলরুটে উঠে গেছে পানি। ব্যাহত হচ্ছে ট্রেন চলাচল। জেলার সদর, পাটগ্রাম, হাতিবান্দা, কালিগ্রাম ও আদিতমারীর প্রায় ২৮টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ এখন পানিবন্দি।
শেরপুরেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নালিতাবাড়ি ও ঝিনাইগাতী নতুন করে ২০টি গ্রাম ডুবে গেছে। সবমিলিয়ে জলবন্দি ৭০টি গ্রাম। ব্রহ্মপুত্রের পানিতে সদরের খনুয়া পটিয়ামারী এলাকার বাঁধ ভেঙে গেছে।
চার দিনের টানা বর্ষণে নীলফামারীর সৈয়দপুরের খড়খড়িয়া নদীর বাঁ তীরে পশ্চিম পাটোয়ারীপাড়া এবং বসুনিয়া এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পড়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
জামালপুরেও বন্যার পরিস্থিতি চরম অবনতি ঘটেছে। যমুনা নদীর পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান জানান, বন্যার পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার যমুনার তীরবর্তী দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলা বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ছে।
গত তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পানির তোড়ে নওগাঁর আত্রাই নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে আত্রাই উপজেলার আমনচাষী কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫টি গ্রামের লোকজন।
যমুনা অনলাইন: টিএফ, কিউএস
Leave a reply