ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের উপ সহকারী প্রকৌশলী সমরজিত ঘরামী সহ ৩ জন অফিস সহকারীকে পিটিয়ে আহত ও অফিস ভাংচুর করেছে আওয়ামীলীগের নেতারা।
খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সহ সেখান থেকে আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর রাজনৈতিক সচিব ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক অপুকে আটক করে। মারামারির এঘটনায় আরো আহত হয় অফিস সহকারী সেক মো. সেলিমুজ্জামান, মো. সাঈদুল ইসলাম ও বলাই চন্দ্র দাস। স্থানীয় জনতা ও উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা গন সমরজিত ঘরামীকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করেন।
এই ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমরজিত ঘরামী বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা ও এনামুল হক অপুকে আসামী করে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকেই উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে একই সাথে প্রতিটি দপ্তরের কর্মকর্তাগন ঘটনার বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাঈদুর রহমান বলেন, সকালে আওয়ামীলীগের দুই নেতার সাথে কথা কাটাকাটি এবং মারপিটের খবর আমাদের কাছে আসলে আমরা দ্রুত পুলিশ পাঠাই। এবং এলাকার পরিস্থিতি শান্ত করা সহ ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে আটক করি। থানায় মামলা হয়েছে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(চলতি দায়িত্ব) হিমাদ্রী খীসা বলেন, সরকারী একজন কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালনে কোন অবহেলা থাকলে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট লিখিত অভিযোগ দিবে। কিন্তু একজন সরকারি কর্মকর্তা সহ কর্মচারীদের এভাবে প্রকাশ্যে মারপিট কোন ভাবেই কাম্য নয়। ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে এবং একজন আটক আছে। আমি আশা করব পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকী আসামীকেও আটক করবে। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে আমরা উপর মহলে সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।
এব্যাপারে উপ সহকারী প্রকৌশলী সমর-জিত ঘরামী বলেন, সকালে আমি ও আমার সহকারীগণ অফিস শুরু করতেই আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এনামেল হক অপু অফিস কক্ষে প্রবেশ করে। এসময় তারা আমার নিকট ৫টি আর্সেনিকমুক্ত টিউবয়েল দাবি করেন। আমি আইন বহির্ভূত কোন কাজ করতে পারবনা বলতেই তারা আমার উপর চড়াও হয়ে উঠে। আমি তাদেরকে বোঝাতে চেষ্টা করলে তারা আমাকে মারতে মারতে অফিস কক্ষের ভেতরে তালা দিতে যায়। এসময় আমার অফিস সহকারীরা বাধা দিলে তাদেরকেও মারধর করে। তাদের মারধরের কারণে আমার মোবাইল ফোন সহ বেশ কয়েকটি দামি জিনিস নষ্ট হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্যরা এগিয়ে আসলে তারা চলে যায়।
এব্যাপারে আওয়ামীলীগের কোন নেতাই সংবাদকর্মীদের কাছে কোন ধরনের বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি। ঘটনার পর থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা এলাকা ত্যাগ করেছেন।
এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন স্থানীয় ও ফরিদপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন।
Leave a reply