মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভিযান বন্ধ, তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং নাগরিকত্ব দেয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় সকালে ভোটাভুটির পর এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১৯৩ সদস্যে মধ্যে ১৭১ সদস্য বৈঠকে উপস্থিত, এবং ২২টি দেশ অনুপস্থিত ছিল।
ভোটাভুটিতে অংশ নেয়া ১৩৫টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ১০টি দেশ। আর উপস্থিত থেকেও কোনো পক্ষেই ভোট দেয়নি ২৬টি দেশ।
বিপক্ষে ভোট দেয়া ১০টি দেশ হলো- রাশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, সিরিয়া, জিম্বাবুয়ে, কম্বোডিয়া, লাউস এবং বেলারুশ।
এছাড়া মিয়ানমারের বিপক্ষে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা। সার্কভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দিয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপ।
প্রস্তাবে মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন পুনর্বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে রোহিঙ্গাদের ওপর যারা নির্যাতন করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্যও দেশটির সরকারকে বলা হয়েছে।
প্রস্তাবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে ‘মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত’ নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ যেন মিয়ানমারকে সহায়তার প্রস্তাব করে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনসহ সব ধরনের সংকট সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
গত ৩১ অক্টোবর থার্ড কমিটিতে ‘মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শিরোনামে মিশর এই খসড়া প্রস্তাবিটি জমা দেয়। এর কো-স্পনসর ছিল ৯৭টি দেশ। এই প্রস্তাবে শুধু রোহিঙ্গা সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে ২০১৫ সালে অং সান সু চি সরকার গঠনের আগে একই শিরোনাম ‘মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। সেখানে মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের ওপর জোর দেয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাবে ১৯টি অনুচ্ছেদের মধ্যে রোহিঙ্গা বিষয়ে শুধু একটি অনুচ্ছেদ ছিল।
Leave a reply