ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগের প্রস্তাব রাহুলের, সোনিয়ার ‘না’

|

ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট। বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের ৩৪৯ আসনের বিপরীতে ইউপিএ জোট জয়ী হয়েছে ৯২ আসনে।

এটি কংগ্রেসের মূল নেতৃত্বে আসার পর রাহুলের দ্বিতীয় পরাজয়। তাই ব্যর্থতার দায় নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তবে কংগ্রেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ইউপিএ জোট নেতা সোনিয়া গান্ধী তার এ প্রস্তাবে সায় দেননি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজএইট্টিন জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে অনুষ্ঠেয় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভায় বিষয়টি তোলা হবে। সেখানেই বিষয়টি ফয়সালা হবে।

২০১৪ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পরও রাহুল গান্ধী পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন।

এবারের নির্বাচন রাহুল গান্ধীর জন্য একটি বড় ধাক্কাও বটে। এই নির্বাচনে রাহুল নিজের পৈতৃক আসনটিও খুইয়েছেন। যেই আমেথিকে গত ৪০ বছর ধরে কংগ্রেসের আধিপত্য, সেখানে বিজেপির প্রার্থী স্মৃতি ইরানির কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন রাহুল। পরাজয় মেনে নিয়ে স্মৃতিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। আমেথিকে ভালোবাসার সঙ্গে দেখভাল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে কেরালার ওয়েনাড থেকে বিজয়ী হয়েছেন গান্ধী পরিবারের এই উত্তরসূরি।

বিজেপির প্রার্থী স্মৃতি ইরানি আমেথিতে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বেশ সক্রিয়ভাবে প্রচার চালান। বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাহুল গান্ধী তার আসনকে গুরুত্ব দেননি।

২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আমেথিতে রাহুলের কাছে পরাজিত হন স্মৃতি ইরানি। তবে রাহুলের জয়ের ব্যবধান কম ছিল। ২০১৪ সালে মার্জিন কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ৭ হাজারে।

রাহুল গান্ধী ওয়েনাড থেকে প্রার্থী হওয়ার পর প্রশ্ন ওঠে, তিনি কি তা হলে আমেথিকে আর নিরাপদ ভাবছেন না? তবে কংগ্রেস তা অস্বীকার করে।

উত্তরপ্রদেশের আমেথি বরাবরই কংগ্রেসের আধিপত্য। ১৯৬৭ সাল থেকে মাত্র দুবার এই কেন্দ্র কংগ্রেসের হাতছাড়া হয়েছে। প্রথমবার ১৯৭৭ সালে। জিতেছিলেন জনতা পার্টির রবীন্দ্র প্রতাপ সিং। দ্বিতীয়বার ১৯৯৮ সালের ভোটে। কংগ্রেস ছেড়ে আমেথির রাজা সঞ্জয় সিং বিজেপিতে যোগ দিয়ে তখন জেতেন। এই দুই ব্যতিক্রম ছাড়া কংগ্রেস ও আমেথি সমার্থক।

১৯৮০ সালে এখান থেকে জিতেছিলেন ইন্দিরা-তনয় সঞ্জয় গান্ধী। তার মৃত্যুর পরে পরপর তিনবার এই কেন্দ্র থেকে জেতেন রাজীব গান্ধী। ১৯৯১ সালে রাজীবের মৃত্যুর পর গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ সতীশ শর্মা কংগ্রেস প্রার্থী হয়ে এই কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হন। মাঝখানে ১৯৯৮ সালে নির্বাচিত হন সঞ্জয় সিং। ১৯৯৯ সালে জেতেন সোনিয়া গান্ধী। ২০০৪ সাল থেকে কেন্দ্রটি রয়েছে রাহুল গান্ধীর দখলে।

সারাদেশের পাশাপাশি আমেথিতে পরাজয়ের পর রাহুল বড় ধাক্কা খেয়েছেন। এমনকি এই নির্বাচনে তার বোন প্রিয়াংকাকেও মাঠে নামায় কংগ্রেস। তাতেও কাজ হয়নি। রাহুল প্রিয়াংকার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে কংগ্রেসে নানা কানাঘুষা শুরু হয়ে গেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply