রয়েল চিটার্স ডেভেলপমেন্ট, নাম দেখেই বোঝা যায় এই সংগঠন কাদের, কি তাদের কাজ। হ্যা যা ভাবছেন সেটাই সত্য। ৪৩ বছর ধরে প্রতারণার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রতারকদের নিয়ে গড়ে তোলেন রয়েল চিটার্স ডেপেলপমেন্ট সংগঠন। কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকার বাসিন্দা বারেক সরকার ওরফে বারেক হাজী এই সংগঠনের প্রধান।
অভিনব কায়দায় প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূলহোতা বারেক সরকারসহ পাঁচ জনকে আটক করার পর জানা যায় এসব তথ্য।
রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়,শনিবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়েছে। গত ২ মার্চ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারকচক্রের ২২ সদস্যকে আটক করা হয়। কিন্তু চক্রের মূলহোতা বারেক সরকার এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ধারাবাহিক তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে বারেকসহ পাঁচ প্রতারককে আটক করা হয়।
৪৩ বছর ধরে প্রতারণার মাধ্যমে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক বারেক ছিলো দীর্ঘ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতারের বাহিরে।
১৮ বছর বয়সে সৌদি আরবে গিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে না পেরে দেশে ফিরে শুরু প্রতারণার ব্যবসা। দীর্ঘ ৪৩ বছর ধরে প্রতারণার মাধ্যমে গড়ে তোলে দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক। গড়ে তোলেন প্রতারকদের সংগঠন রয়েল চিটার্স ডেভেলপমেন্ট।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির বলেন, ‘রয়্যাল চিটার ডেভেলপমেন্ট (আরসিডি) নামে একটি প্রতারণা কোম্পানি খোলে বারেক। এই নামে অফিস নেওয়াসহ সব কার্যক্রম সম্পন্ন হলেও কোম্পানির প্রকৃত নাম সবার অজানা ছিল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আরসিডির ছোট ছোট গ্রুপ রয়েছে। যারা সুসজ্জিত অফিস ভাড়া করে বিত্তবানদের ফাঁদে ফেলে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই চক্রটি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবসরের আগে থেকেই টার্গেট করে। এরপর তাদের কোম্পানিতে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে অফিসে নিয়ে আসে এবং প্রতিষ্ঠানের শেয়ার হোল্ডার হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। অফিস কর্মকর্তাদের চালচলনে অভিভূত হয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিরা অবসরকালীন প্রাপ্ত পেনশনের টাকা বিনিয়োগ করতেন। এর কয়েকদিন পরেই অফিসসহ উধাও হয়ে যেতো অফিসের কর্মকর্তারা।’
এই প্রতারক চক্রটি, দেশের বিভিন্ন এলাকার তাঁত ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকার অর্ডারের ফাঁদে ফেলে ৪০-৫০ হাজার টাকার স্যাম্পল নিতো। কয়েক কোটি টাকার মালামাল তৈরিতে যে পরিমাণ কাঁচামাল প্রয়োজন (সুতা, রং ইত্যাদি) তা সরবরাহের কথা বলে অগ্রিম হিসেবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি।
Leave a reply