অপহরণের প্রায় তিন মাস নিখোঁজ থাকার পর বেলারুশের অনারারি কনসাল ও ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায় বাড়ি ফিরে আসেন গত বৃহস্পতিবার। ফিরে আসার দুদিন পর আজ রোববার নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্যাডে একটি চিঠি তিনি গণমাধ্যমের কাছে পাঠিয়েছেন।
ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে তাকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে ধারণা করছেন অনিরুদ্ধ রায়। গত ২৭ আগস্ট রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে অনিরুদ্ধ রায়কে অপহরণ করা হয়।
ফিরে আসার পর অবশ্য অনিরুদ্ধ জানাননি এতদিন তিনি কোথায় ছিলেন, কারা তুলে নিয়ে গিয়েছিল। এমন প্রেক্ষাপটে আজ গণমাধ্যমে একটি চিঠি পাঠান অনিরুদ্ধ রায়। তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আরএমএম গ্রুপের প্যাডে লেখা ওই চিঠির নিচে তাঁর স্বাক্ষর রয়েছে। চিঠিতে এ ঘটনার বিচার এবং নিজের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও আবেদন জানানো হয়েছে।
গণমাধ্যমে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমি অনিরুদ্ধ কুমার রায়, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএমএম গ্রুপ। আমি ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার শিকার। আমার ব্যবসায়িক অংশীদার মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন গং আমার প্রতিষ্ঠিত তিনটি প্রতিষ্ঠান আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আরএমএম নিট ক্লথিং লিমিটেড ও আরএমএম সোয়েটার লিমিটেড (যার সম্পদের মূল্য ১৫০ কোটি টাকার অধিক) হস্তগত করার জন্য হেন কাজ নাই, যা করে নাই। গত ২৭ আগস্ট, ২০১৭ তারিখে ইউনিয়ন ব্যাংক, গুলশান-১ থেকে মিটিং শেষে ফেরার পথে বিকেল ৪.৩০ মিনিটে উক্ত বিল্ডিং-এর নিচ থেকে আমাকে অপহরণ করা হয়, সম্ভবত ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণেই এমনটি হয়েছে বলে আমি আশঙ্কা প্রকাশ করি।
আমার অবর্তমানে আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। যার মধ্যে :
ক. আমার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এলআইবি-এর শিপমেন্ট সার্টিফিকেট প্রদানে বিএফএলএলএফইএ-এর চেয়ারম্যান হিসেবে অনৈতিকভাবে বাধা প্রদান,
খ. নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্য কোম্পানি হতে পাওনা নগদ ৫ কোটি টাকা কোম্পানির অ্যাকাউন্ট-এ জমার পরিবর্তে নিজের নামে গ্রহণ,
গ. ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের হুমকি প্রদানসহ বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি করা,
ঘ. আমার অনুপস্থিতিতে আমার অনুমতি ব্যতিরেকে আমার অফিসকক্ষ হতে জরুরি নথিপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উল্লেখযোগ্য।
অপহরণ করার পর তারা আমার সমুদয় সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য নানাবিধ চাপ প্রয়োগ করে, কিন্তু আমি দৃঢ়তার সাথে তা মোকাবিলা করি এবং সৃষ্টিকর্তার কৃপায় গত ১৭ নভেম্বর বাসায় ফিরি।
আমি গণতন্ত্রের মানসকন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই ঘটনার ন্যায়বিচার এবং আমার অর্জিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, উচ্চতর প্রশিক্ষণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সুদীর্ঘ ব্যবসার সুরক্ষাসহ সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি।’
Leave a reply