গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর অলিতে-গলিতে রঙিন কুকুর দেখা যাচ্ছে। ঢাকার প্রায় প্রতিটি এলাকার কুকুরের গায়েই দেখা যাচ্ছে লাল ও গোলাপি রঙ লাগানো। আর তা নিয়েই সবার মনে জেগেছে প্রশ্ন। তারা জানতে চেয়েছেন, এমনটা কেন করা হল? কুকুরগুলোকে কে বা কারা এমন সাজিয়েছে?
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে থেকে জানা যায়, জলাতঙ্ক নির্মূলে এসব কুকুরকে টিকা দেয়ার পর এভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় রাজধানীর সব কুকুরকে না মেরে টিকা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। ২০৩০ সালের আগেই দেশ থেকে জলাতঙ্ক নির্মূল করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান তারা।
এভাবে চলতি মাসের ১৪ থেকে ২০ মে পর্যন্ত ৪২ হাজার ৯৩৫টি কুকুরকে টিকা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র। জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা দেয়ার পর যাতে এক কুকুরকে দুইবার টিকা না দিতে হয় সেজন্য চিহ্নিত করতে কুকুরগুলোর গায়ে মুছে যাবে না এমন লাল ও গোলাপি রং লাগানো হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের (সিডিসি) উপপরিচালক ডা. উম্মে রুমান সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের আগেই জলাতঙ্ক নির্মূল করা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজধানীজুড়ে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় আমরা ৪২ হাজার হাজার ৯৩৫টি কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা দেয়া সম্পন্ন করেছি।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিসংখ্যান মতে, রাজধানীতে বর্তমানে ৪৮ হাজারের বেশি কুকুর রয়েছে।
ডা. উম্মে রুমান সিদ্দিকী বলেন, ‘এতো কুকুরকে টিকা দেয়া আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টাটি আমরা করেছি।’ এছাড়া বেসরকারি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ টিকাদান কর্মসূচি চলবে বলে তথ্য দেন তিনি।
ঢাকা সিটি করপোরেশনের (উত্তর) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন বলেন, ‘আমাদের জরিপ অনুযায়ী সারাদেশে ১৬ লাখ কুকুর আছে। এই ১৬ লাখ কুকুর যদি আমরা সবাই বাড়িতে রেখে পুষি তাহলে জলাতঙ্ক একেবারেই নির্মূল হয়ে যাবে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাড়ির নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। সারারাত তারা চেঁচিয়ে ঘুম নষ্ট করবে না।’
Leave a reply