দেশের উত্তরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি। এদিকে, উজানে বন্যা দেখা দেয়ায় গজলডোবা ব্যারেজের কয়েকটি গেট খুলে দিয়েছে ভারত। ফলে পানির চাপ বাড়ছে বাংলাদেশের নদ-নদীগুলোতে। এ পর্যন্ত, বন্যার পানিতে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও নীলফামারীতে শিশুসহ অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সময়ের সাথে মৃত্যুর মিছিল আরও বড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী কয়েকদিনে আবহাওয়া পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
দিনাজপুরে পূণর্ভবা, ডাবুরা ও আত্রাই নদীর পানি বইছে বিপৎসীমার ওপরে। পানি ঢুকে প্লাবিত শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা মালদহপট্টি ও ব্যাংক পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা। দিনাজপুর-ঢাকা রেল লাইনের বিভিন্ন জায়গায় পানি উঠে যাওয়ায় বন্ধ ট্রেন চলাচল। ব্যাহত সড়ক যোগাযোগও।
গত মাসেও একবার বন্যায় ভেসেছিল কুড়িগ্রামের মানুষ। কিন্তু এবার পরিস্থিতি যেন আরও ভয়াবহ। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুঁসে উঠছে দিন দিন। এরইমধ্যে ৯ উপজেলার ৬০টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি।
একটু উঁচু স্থানের সন্ধান করছেন লালমনিরহাটের বানভাসীরা। কিন্তু সে জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন। বাড়িঘর তো ডুবেছেই, তলিয়েছে রাস্তাও। তাই কঠিন সময় পার করছেন জেলার অন্তত ৪ লাখ মানুষ। রেললাইন পানিতে ডুবে যাওয়ায় ব্যাহত লালমনিরহাটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ।
নওগাঁর মান্দায় আত্রাই নদীর পশ্চিম তীরের তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে গেছে। এছাড়া বাঁধের আরও কয়েকটি স্থানও ঝুঁকিপূর্ণ। এরইমধ্যে ডুবে গেছে প্রায় ১০টি ইউনিয়ন। ছোট যমুনার পানি বেড়ে প্লাবিত শহরের বিভিন্ন মহল্লা।
বানের পানিতে ডুবে আছে জামালপুর, সুনামগঞ্জ, গাইবান্ধা, শেরপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাও।
উত্তরের বন্যা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের কয়েকটি গেট খুলে দেয়াকে। এরইমধ্যে রোববার তিন হাজার ৪শ’ কিউসেক পানি ছেড়ে দিয়েছে তারা। আগামী কয়েক দিন ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টি অব্যাহতের পূর্বাভাস থাকায় দেশের ১৪ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply