ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত-সমালোচিত এক নাম মালেক আফসারী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্নরকম স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনায় থাকেন এই পরিচালক। সম্প্রতি ফেসবুক ও গণমাধ্যমে বেশ সমালোচিত হচ্ছেন এই চিত্রপরিচালক।
অভিযোগ উঠেছে, তার সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিটি মৌলিক নয়, নকল ছবি।
তবে অভিযোগ এটাই প্রথম নয়। এর আগেও অভিযোগ উঠেছিল ছবিটির বিরুদ্ধে। গুঞ্জন উঠেছিল তামিল ছবি ডিনামাইট কে নকল করে ‘পাসওয়ার্ড’ নির্মিত হচ্ছে।
সে সময় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে নির্মাতা মালেক আফসারী নিজের ফেসবুক ওয়ালে গত ৫ জুন লিখেছিলেন, ‘যারা এত দিন প্রচার করেছেন ‘পাসওয়ার্ড’ তামিল ছবি ‘ডিনামাইট’-এর নকল। তাদের জন্য আমার পুরস্কার ঘোষণা করা আছে। প্রমাণ দিয়ে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যান।
এবার অভিযোগ উঠেছে, ফরাসি সিনেমা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক এবং দক্ষিণ কোরিয়ান সিনেমা ‘ দ্য টার্গেট’ এই দুই সিনেমার কাহিনি ও চিত্রনাট্যই ব্যবহার করা হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড মানের ছবি ‘পাসওয়ার্ড’ এ!
এ দুটি ছবির সঙ্গে গল্প ও অ্যাকশনের মিল খুঁজে পেয়েছেন দর্শকরা।
অনেকে বলছেন ‘পাসওয়ার্ড’ ছবির কিছু কমেডি অংশ আর গানের দৃশ্য ছাড়া বাকি সবই হুবহু মিলে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ান সিনেমা ‘দি টার্গেট’ এর সঙ্গে। ছবির গল্পটিও একইরকম বলে দাবি তাদের।
দর্শকদের মধ্যে যারা ‘দ্য টার্গেট’ দেখেননি তারা বলছেন, ফরাসি সিনেমা ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক’-এর কাহিনি ও চিত্রনাট্য ব্যবহার করা হয়েছে ‘পাসওয়ার্ড’ ছবিতে।
কিন্তু তারা হয়তো জানেন না যে, ‘দ্য টার্গেট’ ছবিটি ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ফরাসি সিনেমা ’পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক’ এরই রিমেক।
দর্শককের এমন অভিযোগ প্রথমে পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছিলেন পরিচালক মালেক আফসারী এবং সহযোগী প্রযোজক মোহাম্মদ ইকবাল।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে মালেক আফসারী লেখেন, ‘পাসওয়ার্ড‘ নকল, সেটা আমি জানতাম না।
কিন্তু এক সময় স্ট্যাটাসটি মুছে দেন তিনি ও দীর্ঘ বিরতিতে চলে যান।
তবে মঙ্গলবার রাতেই আবার ছবিটি নকল নয় দাবি জানিয়ে কয়েকটি যুক্তি সামনে নিয়ে আসেন তিনি। তার সেই যুক্তিনির্ভর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো-
‘যারা পাসওয়ার্ড মুভি কপি কপি বলে চিল্লায়ে চিল্লায়ে মাথা খারাপ করছে তাদের উদ্দেশ্যে কিছু লজিক্যাল থিয়োরি উপস্থাপন করলাম, যে পাসওয়ার্ড মুভি কোনো অবস্হায় কোরিয়ান মুভি দ্যা টার্গেট মুভির কপি নয়।
(১:লজিক) পাসওয়ার্ড মুভির ডিউরেশন ২ ঘন্টা ১৭ মিনিট,ওদিকে দ্য টার্গেট মুভির ডিউরেশন ১ ঘন্টা ৩৭ মিনিট। যদি পাসওয়ার্ড মুভি এটার কপি হতো তাহলে পাসওয়ার্ড ও ১ ঘন্টা ৩৭ মিনিটের হতো।সুতরাং বলা যেতে পারে এটা কপি না।
(২:লজিক)পাসওয়ার্ড মুভিতে নায়িকা আছে, দ্যা টার্গেট মুভিতে নেই। সুতরাং বলা যেতে পারে পাসওয়ার্ড মুভি কপি না।
(৩: লজিক) পাসওয়ার্ড মুভি পেনড্রাইভ ও পাসওয়ার্ড নিয়ে তৈরি, দ্যা টার্গেট মুভিতে পেনড্রাইভের কোনো অস্তিত্ব নেই। সুতরাং বলা যেতে পারে পাসওয়ার্ড মুভি কপি না।
(৪:লজিক) আমি দ্যা টার্গেট মুভির মূলভাবটা তুলে ধরছি- নায়ক ২ ভাই,একদিন নায়কের ভাইয়ের কাছে কল আসে এক কর্মকর্তার থেকে। এরা ২ জন সেখানে যায় গিয়ে দেখে কর্মকর্তা মৃত। তাকে কেউ খুন করে গেছে। তারপর নায়ককে ধাওয়া করে নায়ক আহত হয়ে রাস্তায় পরে থাকলে তাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়। তারপর যে ডক্টর নায়ককে দেখে তার স্ত্রীকে নায়কের ভাই কিডনাপ করে যাতে তার ভাইয়ের কিছু না হয়।তারপর নায়কের ভাইকে ভিলেন মেরে ফেলে।তার বদলা নিতে ভিলেনকে মারে নায়ক।ব্যাস কাহিনি শেষ। এভাবে হযবরল ভাবে ১ ঘন্টা ৩৭ মিনিটে মুভিটা শেষ হয়।
আপনারা যারা পাসওয়ার্ড মুভি দেখেছেন তারা অবশ্যই দেখবেন যে কোনো অবস্হাতেই পাসওয়ার্ডের সঙ্গে ওই ছবির গল্পের মিল নাই।
অনেকে যারা হেটার্স আছে #সুপারস্টার–শাকিব খানের তারা বলবে অমুক যায়গায় মিল আছে হাবি জাবি। ভাই আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলব,ধরেন আমি একটা গরুর রচনা লিখছি আমার ৫ বেঞ্চ পেছনে একজন সেও গরুর রচনা লিখছে। তো সে ২ পৃষ্ঠায় রচনাটা শেষ করেছে আর আমি ৪ পৃষ্ঠায় শেষ করেছি।
তো ভাই গরু নিয়ে ও কম লিখেছে আমি বেশি লিখেছি। তো এই রচনার মধ্যে গরুর ৪ পা ২ চোখ সেও লিখেছে আমিও লিখেছি। তাই বলে এটা বলা যাবে না আমি ওর কপি করছি।
আমার এক বন্ধু আছে নাম আশরাফুল সে একটা শার্ট কিনছিল নোলক মুভির পোস্টার বাহির হওয়ার আগে। পরবর্তীতে দেখলাম ওর মতোই দেখতে শাকিব খান শার্ট পরে আছে নোলক মুভির পোস্টারে। তাই বলে কি আপনারা বলবেন যে, আশরাফুলের শার্ট কপি করে শাকিব খান পরেছে? মোটেও না। এটা হয়ে যায়।
কপি কারে বলে আজ আপনাদের বুঝাব। কপি হলো সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির থ্রোলি প্রেমা মুভির রিমেক কলকাতা ইন্ডাস্ট্রিতে ফিদা মুভি। যার ডায়লগ ও হুবহু….. এইটারে বলে কপি।
#ধন্যবাদ, আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন‘
মালেক আফসারীর এই দীর্ঘ স্ট্যাটাসের চারটি লজিক বা যুক্তিই প্রচণ্ড হাস্যকর বলে মন্তব্য করছেন নেটিজেনরা।
Leave a reply