বাজেটে বিদেশনির্ভরতা কমছে

|

বাজেটে বিদেশনির্ভরতা ধীরে ধীরে কমে আসছে। দেশীয় উৎস থেকে সম্পদের জোগান বাড়ায় বৈদেশিক নির্ভরতা কমে আসছে। আগে উন্নয়ন বাজেটের প্রায় পুরো অংশ ছিল বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর। এখন উন্নয়ন বাজেটের প্রায় পুরো অংশই দেশীয় উৎস থেকে জোগান দেয়া হয়। মাত্র ১ বা ২ শতাংশ আসে বিদেশি সহায়তা থেকে। তবে বৈদেশিক ঋণ নেয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এসব ঋণের বেশির ভাগই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নেয়া।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে বৈদেশিক নিরর্ভরতা মাত্র ৩ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এ হার আরও কমে যাবে। কেন না, মূল বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হলেও সরকার ওই হারে ঋণ নেয়নি। ফলে এ খাতে নির্ভরতার হার কমবে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৈদেশিক নির্ভরতা ছিল মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বৈদেশিক অনুদানের হার ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ। ১৯৮০-৮১ অর্থবছরে এ নির্ভরতা ছিল আড়াই শতাংশ। এর আগে বৈদেশিক সহায়তার হার আরও বেশি ছিল।

দেশের রাজস্ব আয়সহ অন্যান্য খাত থেকে সরকারের আয় বাড়ায় বৈদেশিক অনুদানের অংশ কমে গেছে। আগে বিশ্বব্যাংক থেকে সরকার বাজেট সহায়তা বাবদ ঋণ নিত। এখন সেটিও নিতে হচ্ছে না। আইএমএফের সঙ্গেও এখন নতুন কোনো ঋণ চুক্তি নেই।

বাজেটে বৈদেশিক সহায়তা বাড়াতে স্বাধীনতার পর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বাংলাদেশকে সহায্যদাতা গোষ্ঠীর একটি বৈঠক হতো। বিশেষ করে বাজেটের আগে এপ্রিল বা মে মাসে এই বৈঠকটি হতো। এতে বাজেটে দাতারা কী পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা দেবে তার ওপর ভিত্তি করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যুক্ত করা হতো। আশির দশক পর্যন্ত এ বৈঠকটি নিয়মিতই হতো।

পরবর্তীতে ৯০-এর দশকে এসে বাজেটে বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ কমতে থাকায় ওই বৈঠকের গুরুত্বও কমে যায়। এখন দাতা গোষ্ঠীর বৈঠকের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম। এর বৈঠকও নিয়মিত হচ্ছে না। মাঝে-মধ্যে সরকার প্রয়োজন মনে করলে এ বৈঠকের আয়োজন করে। তবে এতে কোনো বৈদেশিক সহায়তা চাওয়া হচ্ছে না। তারা এখন প্রকল্প অনুযায়ী সহায়তা করছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply