বগুড়া ব্যুরো
ব্যবসায়ীকে থানায় এনে বেধড়ক মারপিট ও নির্যাতনের অভিযোগে বগুড়া সদর থানার চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা পুলিশ। শনিবার বিকেলে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই.) আবদুল জোব্বার, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এ.এস.আই.) এরশাদ ও নিয়ামত এবং পুলিশ কন্সটেবল এনামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
তারা চারজন বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত থানার ভেতরে বিভিন্ন রুমে নিয়ে হাতকড়া পড়িয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সোহান বাবু আদর নামের ওই ব্যবসায়ী।
শহরের সুলতানগঞ্জ পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী আদরের স্ত্রী শামীমা জানান, তার স্বামী কাটনারপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাপ্পী মিয়া এবং বাপ্পীর স্ত্রী সাথী বানুর সাথে ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে আল ফালাহ বহুমুখী সমিতি নামে একটি সমিতি চালাতেন। সম্প্রতি ব্যবসায়িক বিষয় নিয়ে আদরের সঙ্গে সাথী বানুর বিবাদ শুরু হয়। এনিয়ে সাথী সদর থানায় একটি অভিযোগও দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে থানার কনস্টেবল এনামুল হক মোবাইল ফোনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য আদরকে থানায় ডেকে নেন।
বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আদর জানান, থানায় যাবার পর উপ-পরিদর্শক আবদুল জোব্বার, সহকারী উপ-পরিদর্শক এরশাদ ও নিয়ামত এবং কন্সটেবল এনামুল তাকে থানার ভেতরে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে হাতে হাতকড়া লাগিয়ে মারপিট শুরু করেন। সাথী বানু তার কাছে ১১ লাখ টাকা পাবে-এই স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য তারা লাঠি দিয়ে তার কোমর থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত বেধড়ক পেটাতে থাকে বলে জানান আদর।
আদরের স্ত্রী শামীমা জানান, টাকার কথা স্বীকার না করায় পরদিন শুক্রবারও ওই চার পুলিশ সদস্য আবারো হাতকড়া পড়িয়ে পিছমোড়া করে বেধে তার স্বামীকে পেটাতে থাকেন। ওইদিন রাত ১১টার দিকে মারপিটে আদর জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার শ্বশুর সাইদুর রহমানকে থানায় ডেকে আনেন ওই পুলিশ সদস্যরা। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। রাতেই তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
শনিবার বিকেলের আদরের বাবা সাইদুর রহমানের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে উপ-পরিদর্শক আবদুল জোব্বার, সহকারী উপ-পরিদর্শক এরশাদ ও নিয়ামত এবং কন্সটেবল এনামুলকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।
বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, অভিযোগ পাবার পরপরই ওই চার পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয় পুলিশ লাইনে। পরে তাদের সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে। ব্যবসায়ীর পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান সনাতন চক্রবর্তী।
Leave a reply