রাঙামাটি প্রতিনিধি:
পিংকি আর মিলনের সংসার আলাদা; কিন্তু মন বাঁধা পড়েছে এক রশিতে। নিজেদের ভালোবাসার পরিণতি দিতে অজানার উদ্যেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন দুজন। পেছনে ফেলে গেছেন সংসার, সমাজ আর রাষ্ট্রীয় আইন। অথচ পিংকির আড়াই বছর বয়সি একমাত্র ছেলে পিকাসু চাকমা এখন এই ‘মায়ের ভালোবাসা’র জন্যই নাকাল। আর মিলন চাকমার সাত ও নয় বছরের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। সন্তানদের ভালোবাসা তাদের পিছু টানতে পারেনি; পরস্পরের ভালোবাসায় হারিয়ে গেছেন তারা। শুক্রবার সকালে রাঙামাটির সুবলং বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ১৬ জুন বিকেলে বরকল থানায় প্রতিবেশি মিলন চাকমা(৩১)- এর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে ‘ভাগিয়ে নেয়ার’ অভিযোগ দিয়েছেন স্বামী শ্রীপন চাকমা(কোকিল মনি)। বরকল থানার ওসি মফজল আহমদ বলেন, অভিযোগটি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সুবলং ফাঁড়িতে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপন চাকমা বলেন, স্ত্রী পিংকি চাকমা(২৩) ও আড়াই বছর বয়সি ছেলেকে নিয়েই ছিমছাম সংসার তার। স্বল্প আয়ের কারণে পরিবার নিয়ে রঙগাছড়ি এলাকায় বরকল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সন্তোষ চাকমার বাগান পাহারার কাজ করছিলেন। শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটের দিন সকালে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী হাজাছড়া গ্রামের শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় উঠেন। কিন্তু ‘দোকানে ছাতা ফেলে এসেছি’ বলে ছেলে ও স্বামীকে নৌকায় রেখেই ’ছাতা আনতে যান’ পিংকি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও ফিরে না আসায় শ্বশুর বাড়ির পরিবর্তে বাগানেই ফিরে আসতে হয়েছে শ্রীপন চাকমাকে। পরে জানতে পারেন প্রতিবেশী মিলন চাকমার সাথে তার স্ত্রী পালিয়ে গেছেন।
বর্তমানে স্ত্রী না থাকায় ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই বাবা। বলেন, মা না থাকায় ছেলেকে নিয়ে এখন মহা বিপদে পড়েছি। সারাদিন সে মা মা বলে ডেকে চলছে।
শ্রীপন চাকমা বলেন, অভিযুক্ত মিলন চাকমা ওই বাগানে শ্রমিকের কাজ করত। একই বাগানে কাজ করার সুবাদে পিংকির সাথে তার ‘হৃদ্যতা’ তৈরি হয়।
এ বিষয়ে জানতে মিলন ও পিংকির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
বরকল উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সন্তোষ চাকমা বলেন, শ্রীপন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আমার বাগানে কাজ করে। মিলনও শ্রমিকের কাজ করে সেখানে। শুক্রবার থেকেই শ্রীপনের স্ত্রী পিংকি ও মিলন চাকমাকে পাওয়া যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে দুজনই একসঙ্গে পালিয়েছে। এতে দুটি পরিবারই অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। বিষয়টি স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
Leave a reply