রেকর্ড গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালো বাংলাদেশ

|

সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের অনবদ্য খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ৯৯ বলে ১২৪ রান করে সাকিব আল হাসান অন্যদিকে ৬৯ বলে ৯৪ রান করে লিটন দাস। বিশ্বকাপের এটাই ছিলো লিটন দাসের অভিষেক ম্যাচ।

৩২২ রানের পাহাড় ডিঙাতে নেমে সাকিব আল হাসানের অনবদ্য ব্যাটিংয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখে টাইগাররা। ৪২ ওভার মাঝ পথে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে টাইগাররা।

উইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২২ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। উদ্বোধনী জুটিতে ৮.২ ওভারে ৫২ রান করেন তারা। ২৩ বলে ২৯ রান করে ফেরেন সৌম্য।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে সাকিবকে সঙ্গে নিয়ে ৬৯ রানের জুটি গড়েন তামিম ইকবাল। ৫৩ বলে ৪৮ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন তামিম। রানের খাতা খুলতে না খুলতেই আউট হন মুশফিকুর রহিম। ১৯ ওভারে ১৩৩ রানে সৌম্য, তামিম, মুশফিকের বিদায়ের পর লিটনকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সাকিব।

চতুর্থ উইকেটে তাদের অনবদ্য জুটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। আর এই জুটিতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৬ হজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বিশ্বকাপে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেন বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার।

এর আগে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে রানের পাহাড় গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শাই হোপ (৯৬) ও এভিন লুইসের (৭০) অনবদ্য ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে ৩২১ রানের পাহাড় গড়ে ক্যারিবীয়রা। এছাড়া ২৬ বলে ৫০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন সিমরন হিতমার।

বিশ্বকাপে টাইগারদের বিপক্ষে উইন্ডিজের এটা সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে খালেদ মাসুদ পাইলটের নেতৃত্বাধীন দলের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ২৪৪/৯ রান করেছিল কার্ল হুপারের নেতৃত্বাধীন ক্যারিবীয় দল।

সোমবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৬ রানে ক্রিস গেইলের উইকেট হারিয়ে শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় উইন্ডিজ। ব্যাটিং দানব গেইলকে দ্রুত আউট করে টাইগার শিবিরে খানিকটা স্বস্তির পরশ এনে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। কিন্তু সেই বিপর্যয় কাটিয়ে তুলেন শাই হোপ ও এভিন লুইস জুটি। দ্বিতীয় উইকেটে তারা অনবদ্য ১১৬ রানের জুটি গড়েন।

উইকেটে থিতু হওয়ার পর থেকেই একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান এভিন লুইস। ৫৮ বলে ফিফটি গড়ার পর বল আর মাটিতে ফেলতে দেননি। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ক্যারিবীয় এই ওপেনারকে সাজঘরে ফেরান সাকিব আল হাসান। তার আগে ৬৭ বলে ৬টি চার ও দুই ছক্কায় ৭০ রান করেন লুইস।

সাকিবের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন নিকোলাস পুরান। বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন পুরান। তার আগে ৩০ বলে ২৫ রান করেন তিনি।

পাঁচ নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমতো তাণ্ডব চালান সিমরন হিতমার। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মাত্র ২৫ বলে ৫০ রান পূর্ণ করেন তিনি। ফিফটি করার পরের বলে মোস্তাফিজুর রহমানের কাটারে তামিম ইকবালের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন হিতমার।

এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি আন্দ্রে রাসেল। কাটার মাস্টারের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে সাজঘরে ফেরেন রাসেল। ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলেও বেশি দূর যেতে পারেননি ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে মাত্র ১৫ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় ৩৩ রান করেন হোল্ডার।

ব্যাটসম্যানদের এই আসা-যাওয়ার মিছিলে ব্যতিক্রম ছিলেন শাই হোপ। ওয়ান ডাউনে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন তিনি। ৭৭ বলে ফিফটি করার পর একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান তিনি। মোস্তাফিজুর রহমানের তৃতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১২১ বলে ৪টি চার ও এক ছক্কায় ৯৬ রান করেন হোপ। ইনিংসের একিবারে শেষ দিকে ১৫ বলে ১৯ রান করে সাইফউদ্দিনের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন ড্যারেন ব্রাভো।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩২১/৮ (শাই হোপ ৯৬, এভিন লুইস ৭০, হিতমার ৫০, হোল্ডার ৩৩, নিকোলাস ২৫, ড্যারেন ব্রাভো ১৯; মোস্তাফিজ ৩/৫৯, সাইফউদ্দিন ৩/৭২, সাকিব ২/৫৪)।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply