বিলিয়ন ডলার খরচ করে আমেরিকার কাছ থেকে এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমান কিনছে নরওয়ে। চলে এসেছে প্রথম চালানও। কিন্তু ঝামেলা বেঁধেছে অন্য জায়গায়। এসব বিমান নরওয়ের স্পর্শকাতর তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করছে! এ যেন খাল কেটে কুমির ডেকে আনার মতো বিষয়।
বিষয়টি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে নরওয়ে সরকার। স্বভাবতই, গোপন ও স্পর্শকাতর জাতীয় তথ্য অন্য দেশের সাথে ভাগাভাগি করতে আগ্রহী নয় তারা।
দ্যা রয়েল নরওয়েজিয়ান এয়ারফোর্স সম্প্রতি এই চালানের প্রথম ৩টি বিমান গ্রহণ করেছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় বেরিয়ে এই ঘটনা। এসব বিমান উড়ালে বা কোনো মিশনে পাঠালে এর সেন্সরে যে তথ্য উপাত্ত সংগৃহীত বা জমা হয় তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিনের সার্ভারে গিয়ে জমা হচ্ছে। অনিবার্যভাবে, চলে যাচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনী বা পেন্টাগনের কাছে। এটা বন্ধ করার কোনো উপায় নেই, ফিল্টার করারও কোনো উপায় নেই। নরওয়ের এফ-৩৫ প্রোগ্রামের প্রধান মেজর জেনারেল মরটেন ক্লেভার বলছেন, এই বিষয়টি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন এবং নরওয়ের ও যৌথ বাহিনীর নিরাপত্তা ও স্বার্থের জন্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর।
নরওয়ের বিশাল ভূখণ্ড জুড়ে আছে বনভূমি, ছোট ছোট দ্বীপ ও জলাভূমি। মানুষের পক্ষে উত্তর মেরুর নিকটের এসব এলাকায় গিয়ে সকল তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা চালানো সময় ও ব্যয় সাপেক্ষই বটে। অাধুনিক এসব এফ-৩৫ বিমানে শক্তিশালী সেন্সর সংযুক্ত আছে। ফলে, প্রতিরক্ষা কাজের পাশাপাশি ভূ-খণ্ড জরিপ, পর্যবেক্ষণ ও সম্পদ চিহ্নিত করার কাজেও এসব বিমান ব্যবহার করা দেশটির অন্যতম অন্যতম লক্ষ্য ছিল।
এরইমধ্যে, মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিনের সাথে ৪০টি এফ-৩৫ ফাইটার জেট কেনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে নরওয়ে। এছাড়াও, আরও ১২টি বিমান কেনার ব্যাপারে আলোচনা চলছে। সব মিলিয়ে এ বাবদ তাদের খরচ পড়বে ৮.৩৬ বিলিয়ন ডলার। তাছাড়া, এসব বিমান ব্যবহারযোগ্য থাকাকালে সংরক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য উপকরণসহ (রকেট, মিসাইল, বোমা) মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কনসালটেন্ট লারস জেম্বল বলেন, জাতীয় স্বার্থ মাথায় রেখে এভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্পর্শকাতর তথ্য চলে যাওয়াটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অন্যথায় আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যহত হবে। তবে, তিনি এও বলেছেন, ‘এসব আধুনিক বিমান নরওয়ের সামরিক বহরে নিঃসন্দেহে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
এখন, নরওয়ে চাচ্ছে এমন কোনো উপায় খুঁজে বের করতে যাতে তথ্য-উপাত্তগুলো ফিল্টার করে সংবেদনশীল তথ্যগুলো ডেন অন্তত রক্ষা করা যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উপায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। এদিকে, ২০২০ সালের মধ্যে নরওয়ের সামরিক বহরে এসব বিমান যুক্ত হওয়ার কথা। এমন, ত্রুটি উদঘাটনের এফ-৩৫ বিমান ক্রয়ের প্রকল্পটি যে সংশয়ের মুখে পড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই্।
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply