পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
পটুয়াখালীর বাউফলের নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে জমির বিরোধ নিয়ে সৃষ্ট সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ২০ রাউন্ড গুলিসহ পুলিশের পিস্তল ছিনিয়ে নিয়েছে এক সন্ত্রাসী। সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ওই ঘটনার দুই ঘন্টা পর অভিযুক্ত সন্ত্রাসীর বাড়ির একটি নারিকেল গাছ থেকে গুলিসহ পিস্তল উদ্ধার করা হয়। সংঘর্ষে তিন পুলিশসহ উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাজিরপুর ইউপির বড় ডালিমা গ্রামের হাকিম হাওলাদার গংদের সাথে একই বাড়ির কামাল হোসেন গংদের সাথে ১৯ একর ৫৪ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন পর্যন্ত বিরোধ চলে আসছিল।
সোমবার সকালে কামাল হোসেন গংরা প্রায় ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করতে যায়। হাকিম হাওলাদার গংরা জমি চাষে বাধা দিতে গেলে তাদেরকে জমির কাছে না যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়া হয়। হাকিম হাওলাদার এঘটনা বাউফল থানাকে জানালে ঘটনাস্থলে তিনজন পুলিশ গেলে কামাল হোসেনের পক্ষের ফারুক হাওলাদারের স্ত্রী খাদিজা বেগম পুলিশের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেয় এবং তার সাথে থাকা মৃত্যু আবদুল আলীর ছেলে ফিরোজ হাওলাদার মাঈনুদ্দিন নামের এক এএসআইয়ের কোমর থেকে ২০ রাউন্ড গুলিসহ পিস্তল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এঘটনা বাউফল থানার পুলিশ জানতে পেরে ওসি খন্দোকার মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে বিশাল এক পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চালায়। এসময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ১১টার দিকে ফিরোজের বাড়ির একটি নারিকেল গাছ থেকে লুণ্ঠিত গুলি ও পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
এদিকে জমির বিরোধে পুলিশের সামনেই চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৭ জন আহত হন। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে তিন পুলিশ সদস্যও কমবেশি আহত হন। আহতরা হলেন, সেরাজ হাওলাদার(৬০),আবু বকর(২৫), মাকসুদা বেগম(৩৫) সহিদুল(১৮), বিউটি বেগম(৪৫), হালিম হাওলাদার(২০),অলিল(১৫), মনোয়ারা(৭০) । আহতদের মধ্যে ৬ জনকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে এবং ৪ জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
বাউফল থানার ওসি খন্দোকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনর পর থেকে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হাসান বাউফলে অবস্থান করছেন। ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্তিতি বিরাজ করছে। পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান জানান, সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের উপর হামলা চালায় কতিপয় দূস্কৃতিকারীরা। এসময় পুলিশের অন্ত্র ও গুলি ছিনতাই করা হয়। পরে দুই ঘন্টা অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও ২০রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এঘটনার সাথে যুক্ত সন্দেহভাজন হিসাবে ইতিমধ্যে ৮জনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে তবে অস্ত্র ছিনতাইর মুল হোতাকে আটকের অভিযান অব্যাহত আছে।
Leave a reply