ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সবার আগে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া। ইংলিশদের ৬৪ রানে পরাজিত করার মধ্য দিয়ে সাত ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেল অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ে সবার আগে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হলো অসিদের।
মঙ্গলবার প্রথমে ব্যাট করে অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরিতে ভর করে ৭ উইকেটে ২৮৫ রান করে অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০০ রান করেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। টার্গেট তাড়া করতে নেমে জেসন বেনড্রফ এবং মিসেল স্টার্কের গতির মুখে পড়ে ৪৪.৪ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেন বেন স্টোকস।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২৮৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৫৩ রানে প্রথম সারির ৪ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইংলিশরা। এরপর বেন স্টোকস একাই লাড়াই করে যান। সেঞ্চুরির ঠিক কাছাকাছি গিয়ে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তিনি। মিসেল স্টার্কের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১১৫ বলে ৮টি চার ও দুটি ছক্কায় ৮৯ রান করেন স্টোকস।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলে দলীয় শূন্য রানে বিহানড্রপের গতির বলে স্ট্যাম্প ভেঙে যায় জেমস ভিন্সের। নিজের দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ফর্মের তুঙ্গে থাকা জো রুটকে এলবিডব্লিউ করেন মিসেল স্টার্ক।
দলীয় ষষ্ঠ ওভারে স্টার্কের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগান। অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের গতির মুখে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। তিনি বিহানড্রপের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তার আগে ৩৯ বলে ২৭ রান করেন বেয়ারস্টো।
১৩.৫ ওভারে ৫৩ রানে চার ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইংলিশরা। এরপর পঞ্চম উইকেট জুটিতে জস বাটলারের সঙ্গে ৭১ রান যোগ করেন বেন স্টোকস। ২৭ বলে ২৫ রান করে ফেরেন বাটলার। ষষ্ঠ উইকেটে ক্রিস ওকসের সঙ্গে যোগ করেন ৫৩ রান। একের পর এক বাউন্ডারি হাকিয়ে যাওয়া বেন স্টোকসে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মিসেল স্টার্ক। তার আগে ১১৫ বলে ৮টি চার ও দুটি ছক্কায় দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেন স্টোকস। শেষ দিকে আদিল রশিদ ২০ বলে ২৫ রান করে পরজায়ের ব্যবধান কমালেও দলের হার এড়াতে পারেননি।
অস্ট্রেলিয়া ২৮৫/৭
অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২৮৫ রান। এক উইকেটে ১৭৩ রান করা অস্ট্রেলিয়া এরপর ৫৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পতনের কারণে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ২৮৫ রানে ইনিংস সমাপ্ত করে।
মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ১২৩ রানের জুটি গড়েন ফিঞ্চ। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে ১৬৬ রান করা ওয়ার্নার এদিনও দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যান। মঈন আলীর বলে ক্যাচ তুলে দেয়ার আগে ৬১ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ৫৩ রান করেন ওয়ার্নার।
দ্বিতীয় উইকেটে অ্যারন ফিঞ্চের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়েন উসমান খাজা। এক উইকেটে ১৭৩ রান করা অস্ট্রেলিয়া এরপর ৫৫ রানের ব্যবধানে হারায় ৪ উইকেট। ২৯ বলে ২৩ রান করে বেন স্টোকসের বলে বোল্ড উসমান খাজা।
ইনিংসের শুরু থেকে অসাধারণ ব্যাটিং করে যাওয়া অ্যারন ফিঞ্চ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৫তম সেঞ্চুরি করার পর জফরা আর্চারের শিকার হন। ১১৬ বলে ১০০ রান করে সাজঘরে ফেরেন ফিঞ্চ। ব্যাটিং তাণ্ডব শুরুর আগেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে সাজঘরে ফেরান মার্ক উড। ৮ রানে রান আউট মার্কু স্টইনিস। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ৪১.৫ ওভারে ২২৮ রানে পাঁচ উইকেটে হারায় অস্ট্রেলিয়া।
দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে হাল ধরতে পারেননি সাবেক অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। ৩৪ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩৮ রান করতেই ক্রিস ওকসের বলে ক্যাচ তুলে দেন স্মিথ। তার বিদায়ের পর ইনিংসের শেষ দিকে একাই লড়াই করে যান অ্যালেক্স কেরি। তার ২৭ বলের অপরাজিত ৩৮ রানে ভর করে ৭ উইকেটে ২৮৫ রান তুলতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ৫০ ওভারে ২৮৫/৭ (ফিঞ্চ ১০০, ওয়ার্নার ৫৩, স্মিথ ৩৮, কেরি ৩৮*, উসমান খাজা ২৩, ম্যাক্সওয়েল ১২)।
ইংল্যান্ড: ৪৪.৪ ওভারে ২২১/১০ (বেন স্টোকস ৮৯, বেয়ারস্টো ২৭, ওকস ২৬, আদিল রশিদ ২৫, বাটলার ২৫; বিহানড্রপ ৫/৪৪, মিসেল স্টার্ক ৪/৪৩)।
Leave a reply