ঢাকার কেরানীগঞ্জে গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে অপহরণকারীদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মুগদা শাখার এক ছাত্রী।
ফারাবি হুসাইন নামে ওই ছাত্রী আইডিয়াল স্কুলের সামনে থেকে অপহরণের শিকার হয়। সে ওই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। পরে কেরানীগঞ্জে মাইক্রোবাস থেকে লফিয়ে পড়ে।
শনিবার দুপুরে স্কুলের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় একদল দুর্বৃত্ত তাকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এ সময় অপহরণকারীরা নেশাজাতীয় কিছু দিয়ে মেয়েটিকে অচেতন করে। পরে বিকাল ৪টার দিকে ওই মাইক্রোবাসটি ঢাকা থেকে কেরানীগঞ্জে পৌঁছালে মেয়েটি কৌশলে গাড়ির দরজা খুলে রাস্তায় লাফিয়ে পড়ে দৌড়ে পাশের একটি ফলের দোকানে আশ্রয় নেয়।
ফলের দোকানের মালিক দেলোয়ার হোসেন জানান, কদমতলী বাবুবাজার ব্রিজের প্রান্ত থেকে মেয়েটি দৌড়ে এসে তার দোকানের সামনে পড়ে যায়। এ সময় সে ঠিকমতো কথাও বলতে পারছিল না। আমাকে বাঁচান, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে বলে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে ওর সঙ্গে থাকা আইডি কার্ড থেকে জানা যায়, মেয়েটি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মুগদা শাখার দশম শ্রেণীর ছাত্রী। সেবাযতœ করার পর কিছুটা সুস্থ হলে সে তার বাবার মোবাইল নাম্বারে জানায়। খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
মেয়েটির বাবার নাম অ্যাডভোকেট সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী। তিনি ঢাকা বারের আইনজীবী। বাসা রাজধানীর বাসাব এলাকায়।
সেকান্দার আলী জানান, সকালে পরীক্ষা দিতে স্কুলে যায় ফারাবি। পরীক্ষা শেষে স্কুলের সামনে সে দাঁড়িয়ে ছিল। তখন একটি মাইক্রোবাস তার সামনে এসে দাঁড়ায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। এ সময় তাকে অচেতন করে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর ফারাবি যুগান্তরকে জানায়, ওই গাড়িতে আরও কয়েকটি মেয়ে ছিল। তার মতো ওদেরও অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা বলাবলি করছিল- বালুর মাঠে নিয়ে গাড়ি থামাবে। এরপর ওদের পাচার করা হবে।
ফারাবি আরও জানায়, তাকে গাড়িতে তোলার পর মুখে কিছু একটি চেপে ধরা হয়। এতে অর্ধ অচেতন হয়ে পড়ে সে। তবে মাঝে মাঝে সে অপহরণকারীদে কথা শুনতে পাচ্ছিল। একপর্যায়ে সে গাড়ির সুইচ চেপে দরজা খুলে রাস্তায় লাফিয়ে পড়ে। এরপর কী হয়েছে তার মনে নেই।
কেরানীগঞ্জ থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যোবায়ের বলেন, মেয়েটি সম্ভবত পাচারকারীদে হাতে পড়েছিল। তবে বুদ্ধির জোরে সে বেঁচে গেছে। খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা-মা এলে ওকে তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
ওসি আরও জানান, মেয়েটির বাবা মুগদা থানায় মামলা করবেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে মুগদা থানা পুলিশ চাইলে তাদের সহযোগিতা করা হবে।
(সূত্র: যুগান্তর)
Leave a reply