দুই দিনব্যাপী জি-২০ সম্মেলনে প্রথম দিনে বক্তব্য রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে নিজের অবস্থান তুলে ধরে তিনি জানান, এই সম্মেলনে বাণিজ্যই তার প্রধান লক্ষ্য। বক্তব্য রাখেন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থনীতির দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান সংরক্ষণবাদের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন তিনি।
এছাড়া বহুপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাপান, ভারত ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা। সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে এক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও ভারত- এ তিন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। বৈঠকে বিশ্বের ‘সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। খবর এনডিটিভি ও রয়টার্সের।
শুক্রবার (২৮ জুন) থেকে জাপানে শুরু হয়েছে জি-২০ সম্মেলন। এতে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের ১৯ দেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নেতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নররা। সম্মেলনের ফাঁকে একে অপরের সঙ্গে ব্যক্তিগত ও বহুপাক্ষিক বৈঠক করছেন নেতারা।
এসব নেতার মধ্যে সবার নজর রয়েছে ট্রাম্প ও জিনপিংয়ের দিকে। শনিবার ট্রাম্প-জিনপিং বৈঠকে বসেছেন। এদিকে সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। বৈঠকের পর মোদি বলেছেন, ‘বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
মোদির সঙ্গে আলোচনায় বসার আগে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার ধারণা আমরা ঘোষণা করার মতো বেশ কয়েকটি বড় বিষয় পাব। বড় ধরনের বাণিজ্য চুক্তি। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমরা ভারতের সঙ্গে পণ্য উৎপাদন করা বিষয়ে বেশ বড় ধরনের চুক্তি করছি।’
সম্মেলনে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সংরক্ষণবাদের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন জিনপিং। তিনি বলেন, ‘এসব সংরক্ষণবাদ বৈশ্বিক বাণিজ্য শৃঙ্খলা নষ্ট করছে। নষ্ট হচ্ছে আমাদের সবার স্বার্থ, চাপা পড়ে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা।’ সম্মেলনের প্রথম দিন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন মোদি। তার সঙ্গে কিছু একমত প্রকাশ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমি পুতিন।
এদিন পুতিনের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন ট্রাম্প। বৈঠকে কৌতুকে মেতে ওঠেন তিনি। পুতিনকে নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হন ট্রাম্প। সেখানে এ রিপোর্টার ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, ‘প্রেসিডেন্ট আপনি কী রাশিয়াকে ২০২০ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন।’
সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের জবাব, ‘অবশ্যই, আমি করব।’ তারপরই তিনি পুতিনের দিকে তাকিয়ে হাসিমুখে আঙুল নেড়ে বলেন, ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবেন না প্রেসিডেন্ট, করবেন না।’ জবাবে পুতিন কিছু না বললেও তার মুখে যে তাচ্ছিল্যের হাসি ছিল সেটাই সবকিছু বলে দিয়েছে।
Leave a reply