গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরের টঙ্গীতে মলম ও অজ্ঞান পাটির ৮ সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১ এর সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতে গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী বাজার ও স্টেশন রোড এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের নিকট থেকে ২টি মলম, ১টি স্প্রে, ৪টি মোবাইল ফোন, ৬ টি স্পেয়ার ব্লেট, নগদ ৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. সারওয়ার-বিন-কাশেম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় চুরি ও ছিনতাই হচ্ছে এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর অপরাধ সংঘঠনের জন্য অবস্থান নিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে অজ্ঞান/মলম পার্টির ৮ সদস্যকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলো- মোঃ জয় হোসেন (২৫), মোঃ আল আমীন (২২), মোঃ রানা (২০), মোঃ আসাদুজ্জামান (১৯), মোঃ কবীর হোসেন (১৯), মোঃ লিমন (২৭), মোঃ স্বপন (১৯) ও মোঃ শাকিল হোসেন (২০)।
তিনি আরো জানান, ধৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকা-ময়মনসিংহ, আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া, টঙ্গী-কালীগঞ্জ রুটে এবং গাজীপুরের বিভিন্ন জনাকীর্ণ স্থানে সাধারণ মানুষকে ঘুমের ওষুধ মেশানো হালুয়া খাইয়ে সবর্স্ব লুট করে আসছে।
র্যাবের দেয়া তথ্য মতে, চক্রটিতে প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদা আলাদা কাজ ভাগ করা থাকে। তারা বিভিন্ন ওষুধের দোকান হতে মাইলাম, ডরমিকাম, ল্যাপটিক-২ ইত্যাদি নামের ঘুমের ওষুধ ক্রয় করে এবং সেগুলো গুড়া করে হালুয়ার সাথে মিশিয়ে হকার সেজে পূর্বে থেকে নির্ধারিত স্থানে/বাসে উঠে তাদের হালুয়ার বিভিন্ন গুনাগুন যেমন, গ্যাসট্রিক ও আলসার ভালো হয়, যৌন ক্ষমতা বাড়ায় ইত্যাদি কথা উল্লেখ করতে থাকে। একই স্থানে পূর্বে থেকে উপস্থিত থাকা চক্রটির অন্যান্য সদস্যরা হালুয়া খেতে আগ্রহ প্রকাশ করে এবং আশেপাশের লোকজনকেও উদ্ভুদ্ধ করে। তারা ক্ষেত্র বিশেষে ফ্রিতেও হালুয়া দিয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস জাগানোর জন্য চক্রটির সদস্যরা বিভিন্ন গুনাগুন ও ভাল ফল পাওয়ার কথা স্বীকার করে সবার আগে হালুয়া কিনে খেতে শুরু করে। যা দেখে অন্যান্যরা সরল বিশ্বাসে ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত হালুয়া খেয়ে ১০/১৫ মিনিটের মধ্যে অচেতন হয় পরে। অন্যদের সন্দেহের উদ্রেক হওয়ার পূর্বে চক্রটির হকারবেশী সদস্যটি গাড়ি হতে নেমে যায় এবং গাড়িতে থাকা অন্য সদস্যরা খুব সহজেই তাদের নিকট হতে মোবাইল, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রীসহ সর্বস্ব লুটে নিয়ে যায়। এসময় লুন্ঠনের কাজকে সহজ করার জন্য তাদের কয়েকজন সদস্য ভিকটিমের আশেপাশে ভিড় জমায় যাতে করে বিষয়টি কারো দৃষ্টি গোচর না হয়। এই ভয়ঙ্কয় চক্রটির মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ প্রয়োগের ফলে ভিকটিম ৪৮ ঘন্টার বেশি সময় অজ্ঞান হয়ে থাকে, এতে করে বড় ধরনের শারিরীক ক্ষতি ছাড়াও প্রাণহানীর সম্ভাবনা থাকে।
Leave a reply