পথচারী পারাপারের জন্য কারওয়ান বাজারের ‘প্রজাপতি গুহা’ নামে পরিচিত পাতালপথটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে গুহাটি ভেঙে ফেলার কথা থাকলেও আপাতত ভাঙা হচ্ছে না। এমআরপি-৬ প্যাকেজ-৫ জনসংযোগ কর্মকর্তা রাসেল মাহমুদ প্রজাপতি গুহা বন্ধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর পাশে পথচারী পারাপারের জন্য একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। ১ জুলাই থেকে পথচারী সেতুটি পারাপারের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, উত্তরা থেকে আগারগাঁও হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরপি-৬ মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলছে। এ প্রকল্পের কাজ আটটি প্যাকেজে ভাগ করা হচ্ছে। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
তাই আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। এ অংশের কাজ ২০২০-এর ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের।
এছাড়াও পাতালপথটির জায়গায় মেট্রোরেলের একটি স্টেশন হওয়ার কথা আছে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বলছে, মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনের ভেতর দিয়ে পথচারী পারাপারের সুযোগ থাকবে।
তাই পাতালপথটি যদি ভেঙে ফেলা হয়। তাহলে পথচারী পারাপারের কোনো অসুবিধা হবে না।
প্রজাপতি গুহার কয়েক মিটার দূরে নির্মাণ করা ফুটওভারব্রিজ সোমবার থেকে জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। নতুন এ সেতুটি চলাচলের জন্য রয়েছে এক পাশে সিঁড়ি।
আবার দেখা যায়, সেতুর এক অংশের সিঁড়ি নেমেছে প্রধান সড়কের মাঝখানে (সিএ ভবনের সামনে)। ফলে সড়কের অর্ধেক পারাপার হতে হবে যানবাহন ঝুঁকিতে। ফুটওভারব্রিজের সিঁড়ি একপাশে থাকায় পথচারীর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হবে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এক কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, প্রজাপতি গুহা দিয়ে যেভাবে পথচারী পারাপার করতে দেখা যায়।
নতুন ফুটওভার ব্রিজের এক সিঁড়ি দিয়ে এ পথচারী পারাপার বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আসাদ মিয়া বলেন, পথচারী পারাপারের জন্য উপযুক্ত একটি মাধ্যম এ প্রজাপতি গুহা। তাছাড়া এ পাতালপথ দিয়ে চলাচল করতে সবারই ভালো লাগে।
পুরো গুহাটি বিভিন্ন প্রজাপতি দিয়ে ঘেরা এবং নানা রঙের আলো দিয়ে সাজানো। এটি ভেঙে ফেলা হলে পথচারীরা সমস্যায় পড়বেন।
আরেক পথচারী মোখলেসুর রহমান বলেন, এ পাতালপথটি শুধু পথচারীরা পারাপার হয় তা কিন্তু নয়। অনেকে প্রজাপতি গুহা দেখার জন্য আসে। বাচ্চারা বিভিন্ন রকমের কৃত্রিম প্রজাপতি দেখতেও আসে। গুহাটি সংরক্ষণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৫-এর নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ আহসান বলেন, আগারগাঁও থেকে সার্ক ফোয়ারা পর্যন্ত সড়কটি মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
প্রকল্পের প্রয়োজন অনুযায়ী তারা সড়ক ব্যবহার করবে। প্রকল্প চলাকালীন সড়কের দায়িত্ব তাদের। মেট্রোরেল প্রকল্পের প্রয়োজনে প্রজাপতি গুহার জায়গায় একটি স্টেশন হবে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের প্যাকেজ-৫-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা রাসেল মাহমুদ বলেন, মেট্রোরেল প্রকল্পটি সরকারের একটি ফাস্ট প্রাইয়োরিটি প্রোজেক্ট। প্রকল্পের কাজের সুবিধার্থে প্রজাপতি গুহা প্রথমে ভেঙে ফেলার কথা থাকলেও আপাতত ভাঙা হচ্ছে না।
এটি পথচারী চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পাশে পথচারী পারাপারের জন্য একটি ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।
গুহাটি ভাঙা হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জনসংযোগ কর্মকর্তা বলেন, আপাতত গুহাটি ভাঙা হচ্ছে না। তবে পরে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
Leave a reply