জাবির ছাত্র শৃঙ্খলা বিধির দুই ধারা বাতিলের দাবি

|

জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী শৃঙ্খলা অধ্যাদেশে সংযোজিত ৫ এর (ঞ) এবং ৫ এর (থ) নং ধারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা। সোমবার দুপুর তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন সড়কে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিশ^বিদ্যালয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকেরা অংশ নেয়। তাঁরা শৃঙ্খলা বিধিতে সংযোজিত ধারা দু’টি বাতিলের মধ্যদিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ নিশ্চিতের দাবি জানান।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হল এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তাদের যেকোনো ধরনের মত প্রকাশের স্বাধীনতা পাবে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবার অধিকার। বিশ্ববিদ্যালয় আইন করে তা বন্ধ করতে পারে না।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ধারা দু’টির পুনর্বিন্যাসের দাবি করে তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের ঐতিহ্য আছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও ইংরেজী দৈনিক ইনডিপেনডেন্ট- এর বিশ^বিদ্যালয় প্রতিনিধি প্লাবন তারিক বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি মহল নিজেদের দূর্বলতা ও দুর্নীতি ঢাকার জন্য সাধারণ শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের মুখ চেপে ধরতে হীন চক্রান্ত করছে। তাই বিতর্কিত এই ধারা দু’টি বাতিল না করলে আমরা বৃহৎ আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাইয়ান বিন আমিন এই ধারা বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, মিথ্যা ও বিকৃত তথ্যের পরিমাণ কতটুকু তা নির্ধারণ না করে যে আইন করা হয়েছে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করছে। স্বাধীন ও অনুসন্ধানী সাংবাদিতায় বাঁধা সৃষ্টি করছে।

সাংবাদিকদের দাবিতে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয় জাবি ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় ডিবেট অর্গানাইজেশন।

উল্লেখ্য, অধ্যাদেশের ৫ এর (ঞ) নং ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয়/জাতীয়/আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে/সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ/প্রচার করা বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না।

৫ এর (থ) নং ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ছাত্র/ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টানেটের মাধ্যমে কোনো অশ্লীল বার্তা বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্যক্ত করবে না।
অধ্যাদেশ মতে, ধারা দুটির ব্যতয় ঘটলে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের চোখে ‘অসদাচরণ’ বলে গণ্য হবে। এ জন্য লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার উর্ধ্বে যে কোনো পরিমাণ জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply