ইউরোপে মুসলমানদের সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। এই বৃদ্ধি অমুসলিম জনসংখ্যার চেয়ে তুলনামূলক বেশি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টারে নতুন এক জরিপে এই দ্রুত বর্ধনশীলতার বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেছে। সংস্থাটি প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির ওপর গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে।
গত বুধবার প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে ইউরোপে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান চিত্র ও এর ভবিষ্যত নিয়ে কিছু আগাম ধারণা তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে ইউরোপের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫ শতাংশ মুসলিম। পাঁচ বছর আগে এটি ছিল চার শতাংশের কিছু কম। এই দ্রুত বর্ধনশীলতার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে রাজনৈতিক শরণার্থীরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়া থেকে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণে শরণার্থী হচ্ছেন অনেকে।
পিউ এর ভবিষ্যদ্বাণী মতে, শরণার্থীদের চলমান হারে ইউরোপে প্রবেশ অব্যাহত থাকলে ২০১৫ সাল সাগাদ মহাদেশটির মুসলিম জনসংখ্যা ৫৮ মিলিয়ন বা প্রায় ছ কোটিতে গিয়ে পৌঁছাতে পারে। আর যদি এর চেয়েও বেশি গতিতে শরণার্থীরা প্রবেশ করে তাহলে সাড়ে সাত কোটি পর্যন্ত গিয়ে উঠতে পারে মুসলিম জনসংখ্যা, যা ১১ শতাংশ হবে তখনকার ইউরোপের মোট জনসংখ্যার।
আর যদি শরণার্থীদের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়, তবুই অমুসলিম ইউরোপিয়দের চেয়ে মুসলিম জনসংখ্যা তুলনামূলক বেশি বেড়ে ৩০ লাখ দাঁড়াবে। এর কারণ, মুসলমিদের মধ্যে জন্মহার বেশি (অমুসলিমদের জন্মহার মধ্যে ১.৬ শতাংশ, মুসলিমদের ২.৬ শতাংশ) এবং ইউরোপের মুসলিম জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের বয়স ৩০ বছরের কম। অন্যদিকে অমুসলিম ইউরোপিয়ানদের মধ্যে ৩০ বছরের কম যুবক-যুবতীর সংখ্যা শতকরা মাত্র ৩২ শতাংশ।
জরিপ সংস্থা পিউ আরও বলছে, জার্মানিতে অভিবাসী গ্রহণের কারণে ২০১৬ সালে ৬.১ শতাংশ মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটিতে মুসলিম জনসংখ্যা বাড়বে ১৯.৭ শতাংশ। অথচ পূর্ব ইউরোপীয় দেশ পোল্যান্ডে মুসলিম সংখ্যা বৃদ্ধির হার দশমিক ১ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়াবে মাত্র দশমিক ২ শতাংশ। এতে উভয় অংশের মাঝে পার্থক্য দেখা যাচ্ছে।
Leave a reply