শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষার পর আরও জোরদার গতিতে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিল উত্তর কোরিয়া। খামখেয়ালীপূর্ণ আচরণের পরিণতি মারাত্মক হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল পাক ইয়ং সিক। উত্তর কোরিয়ার হুমকি ঠেকানোর সক্ষমতা আছে বলছে ওয়াশিংটন।
এযাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা উদযাপনে শুক্রবার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের সেন্ট্রাল কিম টু সাং চত্বরে জড়ো হন লাখো মানুষ। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে পরমাণু কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার। জনতার উদ্দেশ্যে রাখা ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কড়া হুঁশিয়ারি দেন উত্তর কোরিয়ার সেনাপ্রধান জেনারেল পাক ইয়ং সিক। তিনি বলেন, “পরমাণু অস্ত্রে সমৃদ্ধ হয়েছি আমরা। জাতি হিসেবে দিনদিন শক্তিশালী হচ্ছি। ইতিহাস বদলে দেবে এই বিজয়। সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের যোগ্য নেতৃত্ব ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফসল এ সাফল্য। শত্রুপক্ষকে সতর্ক করছি। যেকোনো ধরনের আগ্রাসনের ভয়ঙ্কর পরিণতি দেখতে হতে পারে তাদের।”
যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী রাষ্ট্রের তালিকায় নতুন করে নাম ওঠার পরই গেল বুধবার হোয়াসং-১৫ ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা চালায় পিয়ংইয়ং। পিয়ংসং থেকে ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাপান সাগরে গিয়ে পড়ে। ৫৩ মিনিটের বেশি সময় আকাশে থাকা ক্ষেপণাস্ত্রটিকে বিশ্বের জন্য নতুন হুমকি হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র।
প্রত্যয়- সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উত্তর কোরিয়ার ‘আগ্রাসন’ প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “উত্তর কোরিয়া যা কিছুই করছে, তা আমাদের চোখ এড়াচ্ছে না। দেশটির আক্রমণাত্মক আচরণ ও পরমাণু কর্মসূচি- দু’টোকেই খুব গুরুত্বের সাথে দেখছি আমরা। তবে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু ঘটেনি। পরিস্থিতি যেমনই হোক তা সামলানোর ক্ষমতা আমাদের আছে।”
এবিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস বলেন, “উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি ও আধুনিকায়নের অব্যাহত প্রচেষ্টা নিরাপত্তার ঝুঁকিতে ফেলছে পুরো বিশ্বকে। তবে মিত্র দেশগুলোর সহযোগিতায় এ হুমকি ঠেকাবো আমরা।”
এদিকে উত্তর কোরিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী মনোভাব আগুন নিয়ে খেলার শামিল মন্তব্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সের্গেই ল্যাভরোভ বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে দীর্ঘদিন ধরেই পিয়ংইয়ংকে উস্কে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। কোরীয় উপদ্বীপে একের পর সামরিক মহড়া আর তার ওপর জাতিসংঘে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে মার্কিন প্রতিনিধির কঠোর শব্দোচ্চারণ। শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় সমস্যার সমাধান সম্ভব হলেও উল্টোপথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র।”
এর আগে উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু হামলার সতর্কতা হিসেবে হাওয়াইতে দ্বীপজুড়ে বসানো হয় সাইরেন। ৯০’র দশকে অর্ধশতকের স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর মার্কিন প্রশাসনের এমন উদ্যোগ নজিরবিহীন।
Leave a reply