‘ছেলেধরা’ গুজবে কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবকের গণপিটুনির বলি হলেন তাসলিমা। স্বজনরা জানান, রাজধানীর উত্তর বাড্ডার এই প্রাথমিক স্কুলে সন্তান ভর্তির খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন তিনি। কথাবার্তা সন্দেহজনক, এই অজুহাতে গণপিটুনি দিয়ে তাকে মেরে ফেলে শতশত মানুষ। এই ঘটনায় অজ্ঞাত ৪/৫শ’ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে।
এদিকে, ঢাকা মেডিকেল থেকে তাসলিমার মরদেহ হস্তান্তর করা হবে আজ।
তাসনিম তুবা, বয়স মাত্র ৪ বছর, সদা চঞ্চল ফুটফুটে এই শিশু এখনও টের পায়নি ছেলেধরা গুজবে এই সমাজের মানুষরাই তার মমতাময়ী মাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
তুবাকে স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতেই উত্তর-পূর্ব বাড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তাসনিমা বেগম রেনু।
গণপিটুনীর ভিডিওতে দেখা যায়, বাড্ডার অল্প কয়েকজন যুবকই মারছে তাকে। বাকিরা দেখছে, কেউ কেউ কাছ থেকে মোবাইলে ভিডিও করছে। ৮-১০ মিনিট লাঠিপেটার পর আবার উপুর্যপুরি লাথি দেয়া হয়। আধা ঘন্টারও বেশি সময় গণপিটুনির পর রেনুকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হলে তিনি মারা যান।
স্বাভাবিকভাবেই রেনুর পরিবারে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার। লেখাপড়া শেষ করে চাকুরি করেছিলেন আড়ং, ব্র্যাকের মত প্রতিষ্ঠানে, পড়িয়েছিলেন স্কুলেও, বিবাহ বিচ্ছেদের পর ঘরেই কাটাচ্ছিলেন অধিকাংশ সময়। উচ্চ শিক্ষিতা সংগ্রামী একজন নারীর ভাগ্যে এমন পরিণতি মেনে নিতে পারছে না কেউ।
এই হত্যাকান্ডের জন্য গোটা সমাজকেই দায়ী করছে রেনুর পরিবার। সবকিছু ছাপিয়ে রেনুর আদরের সন্তান তুবার ভবিষ্যত নিয়েই চিন্তিত সবাই।
Leave a reply